পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 আরম্ভের আগে একটু ভূমিকার দরকার।—

 একদিন জেলে বসিয়া জেলের কথা লিখিয়াছিলাম, আজ আর একবার বাহিরে আসিয়া সেই অসমাপ্ত কাহিনী লিখিতে বসিয়াছি। যখনকার কথা লিখিতেছি, তখন হইতে আঠারো বছর দূরে সরিয়া আসিয়াছি। ইহাতে সুবিধা ও অসুবিধা দুইই আছে। অসুবিধার কথাটাই আগে বলি। আঠারো বছরের দীর্ঘ ব্যাবধান পার করিয়া দৃষ্টিটাকে পিছনে ঠেলিয়া লইয়া যাইতে হইতেছ, অর্থাৎ অতীতকে উদ্ধার কারতে গিয়া স্মৃতির সাহায্য লইতেছি। স্মৃতি যে সব ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য নহে, তাহা জানা কথা। আবার স্মৃতি যে ইতিহাস নহে, একথাও পণ্ডিতেরা বলিয়া থাকেন। আরও একটা কথা, সময়ে স্মৃতি ঝাপ্‌সা হইয়া আসে, অর্থাৎ স্মৃতির চোখে ছানি পড়িয়া আসিতে থাকে। স্মৃতির এই ঝাপ্‌সা ও প্রায়-অন্ধ চোখে অতীতকে দেখিতে গিয়া যাহা দেখা যায়, তাহা ঠিক অতীতকে দেখা নহে। একেবারে নূতন কিছু দেখার সামিল তাহা। সংক্ষেপে ইহাই হইল অসুবিধার দিক।

 সুবিধাও যে কিছু না আছে, এমন নহে। সুবিধা এই যে, আঠারো বছর বয়স বাড়িয়াছে। বয়স বৃদ্ধি মানে আয়ুর পুঁজি ব্যয় করিয়া জীবন ও পৃথিবী সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা অর্জন। ঘটনার স্থান ও কাল হইতে পাত্র যখন আঠারো বছর দুরত্বে সরিয়া আসে, তখন অভিজ্ঞতার চেয়েও বড় একটা লাভ অদ্ভুতভাবে আয়ত্ত হইয়া পড়ে। স্থান ও কালের সঙ্গে পাত্রের সম্বন্ধ একেবারে স্থায়ী পাকা বন্ধন। দূরত্বের দরুণ স্থান ও কালের বন্ধনটুকু হইতে পাত্রের মুক্তিলাভ