পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বঁটি, এ দিয়ে বড় বড় মাছ কোটা হয়ে থাকে, তেমনিভাবে মানুষ কর্তনও অনায়াসে হ’তে পারে। এর নাম খুন্তি, পেতলের বৈঠাও বলতে পার, তাক্ করে মারতে পারলে মাথা তোমার দু-ফাঁক করে দেওয়া যায়, কোমরে কষে মারতে পারলে তোমাকে জমি নিতে হবে। এর নাম হাতা, এর কার্যকারিতাও পূর্ববৎ। তারপর এটা কি বলতে পার?”

 —“সোডার বোতল।”

 “ছুঁড়তে জানলে বোমার কাজ দেয়। তাক্ যদি ঠিক হয়, তবে তোমার অত বড় মাথাটাই এই বোতল-বোমার এক আঘাতে ফুটিফাটা চৌচির হয়ে যাবে। বিশ্বাস হয় কি?

 এমন সময় এক-গাল দাড়ি নিয়ে আমাদের মহর্ষি জগদীশ ঘরে ঢুকলেন। ঢুকেই থমকে দাঁড়ালেন। প্রশ্ন করলেন, ব্যাপার কি, শৈলেনবাবু?”

 বল্লাম—“চুপ, ডোণ্ট টক্, কথা বলবেন না। শুনে যান।”

 তারপরে লোহার ডাণ্ডাটা হাতে নিয়ে চেয়ার থেকে সমুত্থিত হলাম, সেটা মারাত্মক ভঙ্গীতে বাগিয়ে ধরতেই মহর্ষি দু’পা পিছিয়ে দাঁড়ালেন। বল্লাম, “ভয় নেই, প্রয়োগ করবো না। শুধু দেখাব।”

 সাহেবকে বল্লাম, “সাহেব এর নাম ডাণ্ডা, এতে ঠাণ্ডা না করা যায়, এমন ষণ্ডা মানুষের মধ্যে নাই। প্রত্যেক খাটিয়ার চার কোণায় চারটি ক’রে মোট দেড় শত খাটিয়ায় সবসাকুল্যে ছয়শত এই অস্ত্র আমাদের দখলে আছে। হকি-স্টীকের চেয়ে এগুলি কি কম হিংস্র, না অস্ত্র হিসেবে কম কার্যকরী? চুপ করে থাকলে চলবে না, জবাব দাও।”

 —“বস, বস।”

 —“বসছি। সাহেব তুমি তো তুমি, ছোটখাটো একটা হাতীকে পর্যন্ত এ দিয়ে সাবাড় করা যায়, বুঝলে?”

 মহর্ষি হেসে উঠলেন।

 তাঁকে বল্লাম, “হাস্য করবেন না, সিরিয়স্ কথা হচ্ছে।”

১০৫