পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 বিজয়কে কহিলাম, “কি আরম্ভ করেছিস? যা, স্নান করতে যা।” বাক্যে ফল দিল, বন্ধু স্থান ত্যাগ করিল।

 যাইবার সময় সাহেবকে একটি সদুপদেশ দিয়া গেল, “ভদ্রলোকের মত ব্যবহার কর, নইলে অদৃষ্টে তোমার দুঃখ আছে।”

 ভূপেনবাবু বয়স্ক ব্যক্তি, তদুপরি নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি, তাঁহাকে কিছু বলা শোভা পায় না। তাই কোট্টাম সাহেবকে লইয়াই পড়িলাম।

 বলিলাম, “এস” এবং হস্ত ধারণপূর্বক তাঁহাকে ভীড় হইতে বাহির করিয়া উভয়ে ইঞ্জিন ঘরে গিয়া ঢুকিলাম। ইঞ্জিনের একটা লোহার ডাণ্ডার উপর নিতম্ব স্থাপনপূর্বক আমি হাফ-উপবিষ্ট হইলাম, মিঃ কোট্টাম সম্মুখে দণ্ডায়মান রহিলেন।

 নিজের ইংরেজী বিদ্যায় যতটা কুলাইল, তাহাতে সাহেবকে কয়েকটি উপদেশ প্রদান করিলাম। উপদেশগুলি খুব সারগর্ভ ও ভালো ছিল, কারণ সাহেব জিজ্ঞাসা করিলেন, “বাবু তোমার নাম?”

 বুঝিলাম ভস্মে ঘৃত ঢালিয়াছি। ব্যাটা এক কান দিয়া শুনিয়াছে, অন্য কান দিয়া তাহা ছাড়িয়া দিয়াছে, অর্থাৎ উপদেশে কর্ণপাত করে নাই। এখন তাহার হৃদয়ে বোধহয় কৃতজ্ঞতার ঢেউ চলিতেছে, তাই রক্ষাকর্তার নাম জানাটাই হইয়াছে তাঁহার প্রথম কর্তব্য।

 কহিলাম, “আমার নাম দিয়ে তোমার কোন কাম নাই। যা বলি শোন ক্যাম্প চালাতে হলে এ বুদ্ধি ও মেজাজ দুই তোমাকে ছাড়তে হবে। ক্যাম্পের যাঁরা ম্যানেজার তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করে যদি চল, তবে কোন হাঙ্গামাই তোমাক পোহাতে হবে না, নইলে প্রতি পায়ে তুমি বিপদে পড়বে।”

 শুনিয়া কোট্টাম সাহেব বলিলেন যে, তিনি এই পরামর্শ মনে রাখিবেন। তারপর বলিলেন, “বাবু, তোমার নামটি বল।”

 কি বিপদ, আমার নাম কি এমনই বস্তু যে স্মৃতিতে কবচ করিয়া রাখিলেই সমস্ত মুশকিল আসান হইয়া যাইবে। যাক্, এমন ধন্না দিয়া

১৮৪