পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दकाश ताफनाबव्ी উভয়ে নীরবে আছেন। এটি সলক্ষণ নহে; আর কেহ নাই—অথচ দাই জনেই নীরব—সম্পপণ সখি থাকিলে এরাপ ঘটে না। কিন্তু সৰ্য্যেমখনীর পলায়ন অবধি ইহাদের সম্পপণ্য সখি কোথায় ? কুন্দনন্দিনী সৰ্ব্বদা মনে ভাবিতেন, “কি করিলে, আবার যেমন ছিল, তেমনি হয়।” আজিকার দিন, এই সময়, কুন্দনন্দিনী মািখ ফটিয়া এ কথাটি জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি করিলে যেমন ছিল তেমনি হয় ?” নগেন্দ্র বিরক্তির সহিত বলিলেন, “যেমন ছিল, তেমনি হয় ? তোমাকে বিবাহ বলিয়া কি তোমার অন্যতাপ হইয়াছে ?” কুন্দনন্দিনী ব্যথা পাইলেন। বলিলেন, “তুমি আমাকে বিবাহ করিয়া যে সখী করিয়াছ— তাহা আমি কখনও আশা করি নাই। আমি তাহা বলি না—আমি বলিতেছিলাম যে, কি করিলে সােয্যমখী ফিরিয়া আসে ?” নগেন্দ্ৰ বলিলেন, “ঐ কথাটি তুমি মাখে আনিও না। তোমার মখে সংঘর্তমখনীর নাম শনিলে আমার অন্তদাহ হয়—তোমারই জন্য সহেযািমদুখী আমাকে ত্যাগ করিয়া গেল।” ইহা কুন্দনন্দিনী জানিতেন—কিন্তু নগেন্দ্রের ইহা বলতে কুন্দনন্দিনী ব্যথিত হইলেন। ভাবিলেন, “এটি কি তিরস্কার ? আমার ভাগ্য মন্দ–কিন্তু আমি ত কোন দোষ করি নাই । সৰ্য্যমখীই ত এ বিবাহ দিয়াছে।” কুন্দ আর কোন কথা না কহিয়া বঁ্যজনে রত হইলেন। কুন্দনন্দিনীকে অনেকক্ষণ নীরব দেখিয়া নগেন্দ্ৰ বলিলেন, “কথা কহিতে্যুছ না কেন ? রাগ করিয়াছ ?” কুন্দ কহিলেন, “না।” ন। কেবল একটি ছোটো “না” বলিয়া আবার চুপ করিলে। তুমি কি আমায় আর उछाकदा का ? কু। বাসি বই কি ? ন। “বাসি বই কি ?’ এ যে বালক-ভুলানি কথা। কুন্দ, বোধ হয়, তুমি আমায় কখন ভালবাসিতে না । কু। বরাবর বাসি। নগেন্দ্ৰ বঝিয়াও বঝিলেন না যে, এ সৰ্য্যেমখী নয়। সােয্যমখীর ভালবাসা যে কুন্দনন্দিনীতে ছিল না—তােহা নহে!—কিন্তু কুন্দ কথা জানিতেন না। তিনি বালিকা, ভীর স্বভাব, কথা জানেন না, আর কি বলবেন ? কিন্তু নগেন্দ্র তােহা বঝিলেন না, বলিলেন, “আমাকে সহেযািমখী বরাবর ভালবাসিত । বানরের গলায় মক্তার হার সহিবে কেন ? লোহার শিকলই ভাল।” এবার কুন্দনন্দিনী রোদন সংবরণ করিতে পারিলেন না। ধীরে ধীরে উঠিয়া বাহিরে গেলেন। এমন কেহ ছিল না যে, তাঁহার কাছে রোদন করেন। কমলমণি আসা পয্যন্ত কুন্দ তাহার কাছে যান নাই—কুন্দনন্দিনী, আপনাকে এ বিবাহের প্রধান অপরাধিনী বোধ করিয়া লােজায় তাঁহার কাছে মািখ দেখাইতে পারেন নাই। কিন্তু আজিকার মৰ্ম্মম পীড়া, সহৃদয়া স্নেহময়ী কমলমণির সাক্ষাতে বলিতে ইচ্ছা করিলেন। সে দিন, প্রণয়ের নৈরাশ্যের সময় কমলমণি তাঁহার দদুঃখে দঃখী হইয়া, ৩। হাকে কোলে লইয়া চক্ষের জল মছাইয়া দিয়াছিলেন—সেই দিন মনে করিয়া তাঁহার কাছে কাঁদিতে গেলেন। কমলমণি কুন্দনন্দিনীকে দেখিয়া অপ্ৰসন্ন হইলেনকুন্দকে কাছে আসিতে দেখিয়া বিস্মিত হইলেন, কিছ: বলিলেন না। কুন্দ তাঁহার কাছে আসিয়া বসিয়া, কাদিতে লাগিলেন। কমলমণি কিছ: বলিলেন না; জিজ্ঞাসাও করিলেন না, কি হইয়াছে। সতরাং কুন্দনন্দিনী আপনা। আপনি চুপ করিলেন। কমল তখন বলিলেন, “আমার কােজ আছে।” অনন্তর উঠিয়া গেলেন। কুন্দনন্দিনী দেখিলেন, সকল সখেরই সীমা আছে। দবাত্রিংশতত্তম পরিচ্ছেদ ঃ বিষবক্ষের ফল (হরদেব ঘোষালের প্রতি নগেন্দ্র দত্তের পত্র) তুমি লিখিয়াছ যে, আমি এ পথিবীতে যত কাজ করিয়াছি, তাহার মধ্যে কুন্দনন্দিনীকে বিবাহ করা সব্বাপেক্ষা ভ্ৰান্তিম লক কাজ। ইহা আমি স্বীকার করি। আমি এই কাজ করিয়া ○ > ミ