পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छेन्म्ज्ञा র-বাবকে দিয়া কিনিয়া আনাইয়াছি—তোমাকে দিবার জন্য। তুমি যেখানে যখন থাক, এ পরিলে আমাকে তুমি মনে করিবে। কি জানি ভাই, আজ বৈ তোমার সঙ্গে যদি দেখা না হয়।--ভগবান তাই করুন,--তাই তোমাকে আজ এ ইয়ার রিং পরাইব । এতে আর না বলিও না। ” বলিতে বলিতে সভাষিণী কাঁদিল। আমারও চক্ষে জল আসিল, আমি আর না বলিতে পারিলাম না। সভাষিণী ইয়ার রিং পরাইল। সাজসজজা শেষ হইলে সভাষিণীর ছেলেকে ঝি দিয়া গেল। ছেলেটিকে কোলে লইয়া তাহার সঙ্গে গলপ করিলাম। সে একটা গলপ শনিয়া ঘামাইয়া পড়িল। তার পর মনে একটি দঃখের কথা উদয় হইয়াছিল, তাও এ সখের মাঝে সাভাষিণীকে না বলিয়া থাকিতে পারিলাম না। বলিলাম, “আমি আহমাদিত হইয়াছি, কিন্তু মনে মনে তাঁহাকে একটা নিন্দা করিতেছি। আমি চিনিয়াছি যে, তিনি আমার স্বামী, এই জন্য আমি যাহা করিতেছি, তাহাতে আমার বিবেচনায়, দোষ নাই। কিন্তু তিনি যে আমাকে চিনিতে পারিয়াছেন, এমন কোন মতেই সম্পভাবে না। আমি তাঁহাকে বয়ঃপ্ৰাপত অবস্থায় দেখিয়াছিলাম। এজন্য আমার প্রথমেই সন্দেহ হইয়াছিল। তিনি আমাকে একাদশ বৎসরের বালিকা দেখিয়াছিলেন মাত্র। তিনি আমাকে চিনিতে পারিয়াছেন, এমন কোন লক্ষণও দেখি নাই। অতএব তিনি আমাকে পরাস্ত্রী জানিয়া যে আমার প্রণয়াশায় লব্ধ হইলেন, শনিয়া মনে মনে বড় নিন্দা করিতেছি। কিন্তু তিনি স্বামী, আমি সত্ৰী,-তাঁহাকে মন্দ ভাবা আমার আকৰ্ত্তব্য বলিয়া সে কথার আর আলোচনা করিব না। মনে মনে সঙ্কলপ করিলাম, যদি কখনও দিন পাই, তবে এ সবভাব ত্যাগ করাইব ।” সভাষিণী আমার কথা শনিয়া বলিল, “তোর মত বাঁদর গাছে নেই, ওর যে সত্ৰী নেই।” আমি । আমার কি সস্বামী আছে না কি ? সভা। অা ম’লো! মেয়ে মানষে পরিষ মানষে সমান! তুই কমিসেরিয়েটের কাজ ক’রে টাকা নিয়ে আয় না দেখি ? আমি। ওরা পেটে ছেলে ধরিয়া, প্রসব করিয়া, মানষ করােক, আমি কমিসেরিয়েটে যাইব । যে যা পারে, সে তা করে। পরষ মানষের ইন্দ্রিীয় দমন কি এতই শান্ত ? সভা। আচ্ছা, আগে তোর ঘর হোক, তার পর তুই ঘরে আগন্ন দিস। ও সব কথা রূঢ় মন করে স্বামীর মন ভুলাবি, তার একজামিন দে দেখি? তা নইলে ত তাের 汁Tマ万び আমি একটা ভাবিত হইয়া বলিলাম, “সে বিদ্যা ত কখনও শিখি নাই।" স। তবে আমার কাছে শেখা। আমি এ শাস্ত্রে পন্ডিত, তা জানিস? আমি । তা ত দেখিতে পাই । স। তবে শেখা। তুই যেন পরিষ মানষ। আমি কেমন করিয়া তোর মন ভুলাই দেখা। এই বলিয়া পোড়ারমখী, মাথায় একটা ঘোমটা টানিয়া, সযত্নে স্বহস্তে প্রস্তুত সবাসিত একটি পান আনিয়া আমাকে খাইতে দিল। সে পান সে কেবল রমণ বাবার জন্য রাখে, আর কাহাকেও দেয় না। এমন কি, আপনিও কখন খায় না। রমণ বাবার আলাবোলাটা সেখানে ছিল, তাহাতে কলেক বসান ; গলেই ছাই ছিল মাত্র; তাই আমার সমখে ধারিয়া দিয়া, ফ’ৰ দিয়া ধরান, সাভাষিণী নাটিত করিল। তার পর, ফলে দিয়া সাজান তালবন্তখানি হাতে লইয়া বাতাস করিতে লাগিল। হাতের বালাতে চুড়িতে বড় মিঠে মিঠে বাজিতে লাগিল। আমি বলিলাম, “ভাই ! এ ত দাসীপনা—দাসীপনায় আমার কতদার বিদ্যা, তারই পরিচয় দিবার জন্য কি তাঁকে আজ ধরিয়া রাখিলাম ? সভাষিণী বলিল, “আমরা দাসী না ত কি ?” আমি বলিলাম, “যখন তাঁর ভালবাসা জন্মিবে, তখন দাসীপনা চলিবে। তখন পাখা করিব, পা টিপিব, পান সাজিয়া দিব, তামাকু ধরাইয়া দিব। এখনকার ওসব নয়।” তখন সভাষিণী হাসিতে হাসিতে আমার কাছে আসিয়া বসিল। আমার হাতখানা আপনার হাতের ভিতর তুলিয়া লইয়া, মিঠে মিঠে গলপ করিতে লাগিল। প্রথম প্রথম, হাসিতে হাসিতে, পান চিবাইতে চিবাইতে, কাণবালা দোলাইয়া, সে যে সং সাজিয়াছিল, তারই অনােরােপ কথা কহিতে লাগিল। কথায় কথায় সে ভাব ভুলিয়া গেল। সখীভাবেই কথা কহিতে লাগিল। আমি যে চলিয়া যাইব, সে কথা পাড়িল। চক্ষতে তার এক বিন্দ জল চক চক করিতে লাগিল। তখন ○○ ふ 之8