পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ಇ দলনীর মাথায় বজাঘাত পড়িল। ফন্সটরের নৌকা তখন দটির অতীত হইয়াছিল—তথাপি সে কলে কলে দৌড়িল, তাহা ধরিতে পারিবে বলিয়া দলনী কলে কলে দৌড়িল। কিন্তু বহন্দরে দৌড়িয়া নৌকা ধরিতে পারিল না। পকেবই সন্ধ্যা হইয়াছিল—এক্ষণে অন্ধকার হইল। গঙ্গার উপরে আর কিছ দেখা যায় না-অন্ধকারে কেবল বর্ষার নববারি-প্রবাহের কলকল ধবনি শানা যাইতে লাগিল। তখন হতাশ হইয়া দলনী, উন্মলিত ক্ষদ্র বক্ষের ন্যায় বসিয়া পড়িল । ক্ষণকাল পরে দলনী, আর গঙগাগ্যভামধ্যে বসিয়া কোন ফল নাই বিবেচনা করিয়া গাত্ৰোত্থান করিয়া, ধীরে ধীরে উপরে উঠিল। অন্ধকারে উঠিবার পথ দেখা যায় না। দই একবার পড়িয়া উঠিল। উঠিয়া ক্ষীণ নক্ষত্ৰলোকে, চারি দিক চাহিয়া দেখিল। দেখিল, কোন দিকে কোন গ্রামের কোন চিহ্ন নাই--কেবল অনন্ত প্রান্তর, আর সেই কালনাদিনী নদী ; মনষ্যের ত কথাই নাই- কোন দিকে আলো দেখা যায় না—গ্রাম দেখা যায় না—বাক্ষ দেখা যায় না—পথ দেখা যায় না—শগাল কুক্কর ভিন্ন কোন জন্তু দেখা যায় না-কলনদিনী নদী-প্রবাহে নক্ষত্ৰ নাচিতেছে দেখা যায়। দলনী মাতৃত্যু নিশ্চয় করিল। সেইখানে প্রান্তরমধ্যে নদীর অনতিদারে দলনী বসিল। নিকটে ঝিল্লী রব করিতে লাগিল --নিকটেই শগাল ডাকিতে লাগিল। রাত্ৰি ক্ৰমে গভীরা হইল—অন্ধকার ক্ৰমে ভীমতার হইল। রাত্ৰি দিবতীয় প্রহরে, দলনী মহা ভয় পাইয়া দেখিল, সেই প্রান্তরমধ্যে, এক দীঘাকার পরষ একা বিচরণ করিতেছে। দীঘর্ণাকৃত পােরষি, বিনা বাক্যে দলনীর পাশে বর্ণ আসিয়া বসিল। আবার সেই! এই দীঘর্ণাকৃত পরিষ শৈবলিনীকে তুলিয়া লইয়া ধীরে ধীরে অন্ধকারে পৰ্ব্ববতারোহণ করিয়াছিল। তৃতীয় পরিচ্ছেদ ঃ নিত্যগীত মঙেগরে প্রশস্ত আটালিকামধ্যে সবরীপচন্দ জগৎশেঠ এবং মাহতাবচন্দ জগৎশেঠ দই ভাই বাস করিতেছিলেন। তথায় নিশীথে সহস্ৰ প্ৰদীপ জীবলিতেছিল। তথায় শেবতমম রবিন্যাসশীতল মন্ডপমধ্যে, নৰ্ত্তকীর রত্নাভরণ হইতে সেই অসংখ্য দীপমালারশিম প্রতিফলিত হইতেছিল! BDBBS BBDBB BBBS S uBBB BSBB BBBSBDBB S BBB S BBBBS SBBB BBBeBDASYS উত্তজবল সবৰ্ণ-মন্তা-খচিত মসনদে, উত্তজবল হীরকান্দি-খচিত গন্ধপত্রে, শেঠদিগের কন্ঠবিলম্পিবত সােথ লোজজবুল মক্তাহারে,--আর নত্তকীর প্রকোঠ, কন্ঠ, কেশ এবং কণের আভরণে জীবলিতেছিল। তাহার সঙ্গে মধ্যর গীতশব্দ উঠিয়া উত্তজবল মধরে মিশাইতেছিল। উক্তজবলে মধরে মিশিতেছিল! যখন নৈশ নীলাকাশে চন্দ্রোদয় হয়, তখন উত্তজবলে মধরে মিশে ; যখন সন্দেরীর সজল। নীলেন্দীবর লোচনে বিদ্যােচ্ছকিত কটাক্ষ বিক্ষিপত হয়, তখন উজজবলে মধরে মিশে ; যখন স্বচ্ছ নীল সরোবরশায়িনী উন্মেষোন্মখী নলিনীর দলরাজি, বালসায্যের হেমোক্তজবল কিরণে বিভিন্ন হইতে থাকে, নীল জলের ক্ষদ্র ক্ষদ্র উমি মালার উপর দীর্ঘ রাশিম সকল নিপতিত হইয়া পদ্মপত্ৰস্থ জলবিন্দকে জবালিয়া দিয়া, জলচর বিহঙ্গকুলের কল কন্ঠ বাজাইয়া দিয়া, জলপদ্মের ওঠাধর খালিয়া দেখিতে যায়, তখন উক্তজবলে মধরে মিশে ; আর যখন তোমার গহিণীর পাদপদ্মে, ডায়মনকাটা মল-ভান, লটাইতে থাকে, তখন উজ্জ্বজবলে মধরে মিশে। যখন সন্ধ্যাকালে, গগনমণ্ডডালে, সােয্যতেজ ডুবিয়া যাইতেছে দেখিয়া নীলিমা তাহাকে ধরিতে ধরিতে পশ্চাৎ পশ্চাৎ দৌড়ায়, তখন উজজবলে মধরে মিশে,--আর যখন, তোমার গহিণী কণাভরণ দোলাইয়া, তিরস্কার করিতে করিতে তোমার পশ্চাদ্ধাবিত হন, তখন উক্তজবলে মধরে মিশে। যখন চন্দ্রকিরণ-প্ৰদীপত গঙ্গাজলে বায়-প্ৰপীড়নে সফেন তরঙ্গ উৎক্ষিপত হইয়া চাঁদের আলোতে জীবলিতে থাকে, তখন উত্তজবল মধরে মিশে—আর যখন সপাক্লিীংশ্যাক্ষেপন তরঙ্গ তুলিয়া সাফটিকপাত্রে জীবলিতে থাকে, তখন উক্তজবলে মধরে মিশে । যখন জ্যোৎস্যনাময়ী রাত্ৰিতে দক্ষিণ বায় মিলে, তখন উক্তজবলে মধরে মিশে—আর যখন সন্দেশময়, ফলাহারের পাতে, রজত মাদ্রা দক্ষিণা মিলে, তখন উক্তজবলে মধরে মিশে। যখন প্ৰাতঃসায্য-কিরণে হষোৎফল্প হইয়া বসন্তের কোকিল ডাকিতে থাকে, তখন উজজবলে মধরে মিশে—আর যখন প্ৰদীপমালার আলোকে রত্নাভারণে ভূষিত হইয়া, রমণী সঙ্গীত করে, তখন উজ্জ্বজবলে মধরে মিশে। 8 Ó Gz