পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

व७कभ ब्रा5नावव्नी পিস্তলের শব্দ শনিয়া রাপা প্রভৃতি ভূতাবগা দেখিতে আসিল। দেখিল, বালক-নখরাবিচ্ছিন্ন পদ্মিনীবৎ রোহিণীর মতদেহ ভূমে লটাইতেছে। গোবিন্দলাল কোথাও নাই! দশম পরিচ্ছেদ ৪ দ্বিতীয় বৎসর সেই রাত্রেই চৌকিদার থানায় গিয়া সংবাদ দিল যে, প্রসাদপরের কুঠিতে খােন হইয়াছে। সৌভাগ্যবশতঃ থানা সে সন্থান হইতে ছয় ক্লোশ ব্যবধান। দারোগা আসিতে পরদিন বেলা প্রহরেক হইল। আসিয়া তিনি খনের তদারকে প্রবত্ত হইলেন। রীতিমত সািরতহাল ও লাস তদারক করিয়া রিপোর্ট পাঠাইলেন। পরে রোহিণীর মতদেহ বান্ধিয়া ছাঁদিয়া গোেরর গাড়িতে বোঝাই দিয়া, চৌকিদারের সঙ্গে ডাক্তারখানায় পাঠাইলেন। পরে সন্নান করিয়া আহারাদি করিলেন । তখন নিশিচন্ত হইয়া অপরাধীর অন্যসন্ধানে প্রবত্ত হইলেন। কোথায় অপরাধী ? গোবিন্দলাল রোহিণীকে আহত করিয়াই গহ হইতে নিস্ক্রান্ত হইয়াছিলেন, আর প্রবেশ করেন নাই। এক রাত্ৰি এক দিন অবকাশ পাইয়া গোবিন্দলাল কোথায় কত দীর গিয়াছেন, তাহা কে বলিতে পারে ? কেহ তাঁহাকে দেখে নাই। কোন দিকে পলাইয়াছেন, কেহ জানে না। তাঁহার নাম পৰ্য্যন্ত কেহ জানিত না। গোবিন্দলাল প্রসাদ পরে কখনও নিজ নাম ধাম প্রকাশ করেন নাই; সেখানে চুনিলাল দত্ত নাম প্রচার করিয়াছিলেন। কোন দেশ থেকে আসিয়াছিলেন, তাহা ভূত্যেরা পৰ্য্যন্ত জানিত না। দারোগা কিহুদিন ধরিয়া একে ওকে ধরিয়া জোবানবন্দী করিয়া বেড়াইতে লাগিলেন। গোবিন্দলালের কোন অনসন্ধান করিয়া উঠিতে পারিলেন না। শেষে তিনি আসামী ফেরার বলিয়া এক খাতেমা রিপোর্ট দাখিল করিলেন। তখন যশোহর হইতে ফিচেল খাঁ নামে একজন সািদক্ষ ডিটেকটিব ইনস্পেক্টর প্রেরিত হইল। ফিচেল খাঁর অন্যসন্ধানপ্রণালী আমাদিগের সবিস্তারে বলিবার প্রয়োজন নাই। কতকগলি চিঠিপত্র তিনি বাড়ী তল্লাসীতে লন। তদ্বারা তিনি গোবিন্দলালের প্রকৃত নাম ধাম অবধারিত করিলেন। বলা বাহাল্য যে, তিনি কািট স্বীকার করিয়া ছদ্মবেশে হরিদ্রাগ্রাম পৰ্যন্ত গমন করিলেন। কিন্তু গোবিন্দলাল হরিদ্রাগ্রামে যান নাই, সতরাং ফিচেল খাঁ সেখানে গোবিন্দলালকে প্ৰাপত না হইয়া প্রত্যাবত্তন করিলেন। এ দিকে নিশােকর দাস সে করােল কালসমান রাজনীতে বিপন্ন রোহিণীকে পরিত্যাগ করিয়া প্ৰসাদপরের বাজারে আপনার বাসায় আসিয়া উপসিথত হইলেন। সেখানে মাধবীনাথ তাঁহার প্রতীক্ষা করিতেছিলেন। মাধবীনাথ গোবিন্দলালের নিকট সপরিচিত বলিয়া স্বয়ং তাঁহার নিকট গমন করেন নাই; এক্ষণে নিশােকর আসিয়া তাঁহাকে সবিশেষ বিজ্ঞাপিত করিলেন। শনিয়া মাধবীনাথ বলিলেন, “কাজ ভাল হয় নাই। একটা খনোখনি হইতে পারে।” ইহার পরিণাম কি ঘটে, জানিবার জন্য উভয়ে প্রসাদপরের বাজারে প্রচ্ছন্নভাবে অতি সাবধানে অবস্থিতি করিতে লাগিলেন। প্রভাতেই শনিলেন যে, চুনিলাল দত্ত আপন স্ত্রীকে খান করিয়া পলাইয়াছে। তাহারা বিশেষ ভীত ও শোকাকুল হইলেন; ভয় গোবিন্দলালের জন্য; কিন্তু পরিশেষে দেখিলেন, দারোগা কিছ. করিতে পারিলেন না। গোবিন্দলালের কোন অনসন্ধান নাই। তখন তাঁহারা এক প্রকার নিশিচন্ত হইয়া, অথচ অত্যন্ত বিষগ্নভাবে সবসথানে প্রস্থান করিলেন। একাদশ পরিচ্ছেদ ঃ তৃতীয় বৎসর ভ্রমর মরে নাই। কেন মরিল না, তাহা জানি না। এ সংসারে বিশেষ দঃখ এই যে, মরিবার উপযক্ত সময়ে কেহ মরে না। অসময়ে সবাই মরে। ভ্রমর যে মরিল না, বঝি ইহাই তাহার কারণ। যাহাই হউক, ভ্রমর উৎকট রোগ হইতে কিয়দংশে মাক্তি পাইয়াছে। ভ্রমর আবার পিত্ৰালয়ে। মাধবীনাথ গোবিন্দলালের যে সংবাদ আনিয়াছিলেন, তাঁহার পত্নী অতি সঙেগাপনে তাহা জ্যোিপঠা কন্যা ভ্রমরের ভগিনীর নিকট বলিয়াছিলেন। তাঁহার জ্যেঠা কন্যা অতি গোপনে তাহা ভ্রমরের নিকট বলিয়াছিল। এক্ষণে ভ্রমরের জ্যোঠা ভগিনী যামিনী বলিতেছিল, “এখন । তিনি কেন হলদেগাঁয়ের বাড়ীতে আসিয়া বাস করন না ? তা হলে বোধ হয় কোন আপদ, থাকিবে না।” Gk Ny V