পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७िका ब्राफ़नाबब्लगै লাথি মারিল। একজন গঙ্গারামকে বধিতে লাগিল, আর একজন তাহার ভগিনীকে ধরিতে গেল। সে উদ্ধবশিবাসে পলায়ন করিল। যে প্রতিবাসীরা সঙ্গে ছিল, তাহারা কে কোথা পলাইল, কেহ দেখিতে পাইল না। পাইকেরা গঙগারামকে বধিয়া মারিতে মারিতে কাজির কাছে লইয়া গেল। ফকির মহাশয় দাড়ি নাড়িতে নাড়িতে হিন্দীদিগের দনীতি সম্পবন্ধে অতি দিকেবাধ্য ফারসী ও আরবী শবদ সকল সংযক্ত নানাবিধ বস্তৃতা করিতে করিতে সঙ্গে গেলেন। গঙ্গারাম কাজি সাহেবের কাছে আনীত হইল, তাহার বিচার আরম্ভ হইল। ফরিয়াদী শাহ সাহেব-সাক্ষীও শাহ সাহেব এবং বিচারকত্তাও শাহ সাহেব। কাজি মহাশয় তাঁহাকে আসন ছাড়িয়া দিয়া দাঁড়াইলেন, এবং ফকিরের বস্তৃতা সমাপত হইলে, কোরাণ ও নিজের চশমা এবং করিলেন যে, ইহাকে জীয়ন্ত পতিয়া ফেল। যে যে হাকুম শানিল, সকলেই শিহরিয়া উঠিল। গঙ্গারাম বলিল, “যা হইবার তা ত হইল, তবে আর মনের আক্ষেপ রাখি কেন ?” এই বলিয়া গঙ্গারাম শাহ সাহেবের মাখে এক লাথি মারিল। তোবা তোবা বলিতে বলিতে শাহ সাহেব মাখে। হাত দিয়া ধরাশায়ী হইলেন। এ বয়সে তাঁর যে দই চারিটা দাঁত অবশিস্ট ছিল, গঙ্গারামের পাদস্পশে তাহার মধ্যে অনেকগলিই মন্তিলাভ করিল। তখন হামরাহি পাইকেরা ছটিয়া আসিয়া গঙ্গারামকে ধরিল এবং কাজি সাহেবের আজ্ঞানসারে তাহার হাতে হাতকড়ি ও পায়ে বেড়ি দিল এবং যে সকল কথার অর্থ হয় না, এরপ শবদ প্রয়োগপববক তাহাকে গালি দিতে দিতে এবং ঘষি, কিল ও লাথি মারিতে মারিতে কারাগারে লইয়া গেল। সে দিন সন্ধ্যা হইয়াছিল; সে দিন আর কিছ হয় না—পরদিন তাহার জীয়ন্তে কবর হইবে। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ যেখানে গাছতলায় পড়িয়া এলোচুলে মাটিতে লাটাইয়া গঙ্গারামের ভগিনী কাঁদিতেছিল, সেইখানে এ সংবাদ পৌছিল। ভগিনী শানিল, ভাইয়ের কাল জীয়ন্তে কবর হইবে। তখন সে উঠিয়া বসিয়া চক্ষ মাছিয়া এলোচুল বাঁধিল । গঙ্গারামের ভগিনী শ্ৰীীর বয়স পাচিশ বৎসর হইতে পারে। সে গঙ্গারামের অনজা। সংসারে গঙ্গারাম, গঙগারামের মা এবং শ্ৰী ভিন্ন কেহই ছিল না। গঙ্গারামের মা ইদানীং অতিশয় রগনা হইয়াছিলেন, সতরাং শ্ৰীই ঘরের গহিণী ছিল। শ্ৰী সধবা বটে, কিন্তু অদল্টক্লমে সর্বামিসহবাসে বঞিতা। ঘরে একটি শালগ্রাম ছিল,-এতটকু ক্ষদ্র একখানি নৈবেদ্য দিয়া প্রত্যহ তাহার একটা পজা হইত। শ্ৰী ও শ্ৰীীর মা জানিত যে, ইনিই সাক্ষাৎ নারায়ণ।। শ্ৰী চুল জড়াইয়া সেই শালগ্রামের ঘরের দাবারের বাহিরে থাকিয়া মনে মনে অসংখ্য প্ৰণাম করিল। পরে হাত জোড় করিয়া বলিতে লাগিল, “হে নারায়ণ! হে পরমেশবর! হে দীনবন্ধ! হে অনাথনাথ ! আমি আজ যে দঃসাহসের কাজ করিব, তুমি ইহাতে সহায় হাইও । আমি সত্ৰীলোক-পাপিষ্ঠা। আমা হইতে কি হইবে! তুমি দেখিও ঠাকুর!” এই বলিয়া সেখান হইতে শ্ৰী অপসত হইয়া বাটীর বাহিরে গেল। পাঁচকড়ির মা নামে তাহার এক বিষীয়সী প্রতিবাসিনী ছিল। ঐ প্রতিবাসিনীর সঙ্গে ইহাদিগের বিলক্ষণ আত্মীয়তা ছিল, সে শ্রীর মারা অনেক কাজ-কৰ্ম্মম করিয়া দিত। এক্ষণে তাহার নিকটে গিয়া শ্ৰী চুপি চুপি কি বলিল। পরে দই জনে রাজপথে নিম্প্রক্সান্ত হইয়া, অন্ধকারে গালি-ঘজি পার হইয়া অনেক পথ হাঁটিল। সে দেশে কোঠা-ঘর তত বেশী নয়, কিন্তু এখনকার অপেক্ষা তখন কোঠা-ঘর অধিক ছিল, মধ্যে মধ্যে একটি একটি বড়-বড় অট্টালিকাও পাওয়া যাইত। ঐ দাই জন সত্ৰীলোক আসিয়া, এমনই একটা বড় অট্টালিকার সম্পমখে উপস্থিত হইল। বাড়ীর সম্পমাখে দীঘি, দীঘিতে বাঁধা ঘাট। বাঁধা ঘাটের উপর কতকগলো। দবারবান বসিয়া, কেহ সিদ্ধি ঘটিতেছিল, কেহ টিপা। গাইতেছিল, কেহ সত্বদেশের প্রসঙ্গে চিত্ত সমাপণ করিতেছিল। তাহদেরই মধ্যে এক জনকে ডাকিয়া পাঁচকড়ির মা বলিল, “পাঁড়ে ঠাকুর! ভান্ডারীকে ডেকে দাও না ?” দ্বারবান বলিল, “হািম পড়ে নেহি, হাম মুিশর হোতে হে ।” পাঁচকড়ির মা। তা আমি জানি না, বাছা! পাঁড়ে কিসের বামন ? মিশর যেমন বামন! ヒたc 8