পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

را ہ سراد পৌত্তলিকতার প্রতিকুলতা। বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় । কাঠের দোলা ছিল, রামমোহন রায় অঙ্গচালনার জন্ত তাহাতে দোল খাইতেন। আমি বৈকালে বাগানে গেলে তিনি আমাকে সেই দোলায় বসাইয়। আপনি টানিতেন, ক্ষণেক পরে আপনি তাহাতে বসিয়া বলিতেন, ব্রাদার, এখন তুমি টান। আমি পিতার জ্যেষ্ঠ পুত্র। কোন কাৰ্য্যোপলক্ষে নিমন্ত্ৰণ করিবার জন্ত আমাকেই বাড়ী বাড়ী যাইতে হইত। আশ্বিন মাসের দুর্গোৎসব। আমি এই উপলক্ষে রামমোহন রায়কে নিমন্ত্ৰণ করিতে যাই। গিয়৷ বলিলাম—রামমণি ঠাকুরের নিবেদন তিন দিন আপনার প্রতিমা-দর্শনের নিমন্ত্রণ। শুনিয়াই তিনি বলিলেন, ব্রাদার, আমাকে কেন ? রাধাপ্রসাদকে বল। এত দিন পরে সেই কথার ভাব ও অর্থ বুঝিতে পারিলাম। এই অবধি আমি মনে মনে সঙ্কল্প করিলাম যে, রামমোহন রায় যেমন কোন প্রতিমা-পূজায় ও পৌত্তলিকতায় যোগ দিতেন না, তেমনি আমিও আর তাহাতে যোগ দিব না। কোন প্রতিমাকে পূজা করিব না, কোন প্রতিমাকে প্রণাম করিব না, কোন পৌত্তলিক পূজায় নিমন্ত্রণ গ্রহণ করিব না। সেই অবধি আমার এই সঙ্কল্প দৃঢ় হইল। তখন জানিতে পারিলাম না যে, কি আগুনে প্রবেশ করিলাম। আমার ভাইদের লইয়া একটা দল বাধিলাম। আমরা সকলে মিলিয়া সঙ্কল্প করিলাম যে, পূজার সময়ে আমরা পূজার দালানে কেহই যাইব না, যদি কেহ যাই তবে প্রতিমাকে প্রণাম করিব না। তখন সন্ধ্যাকালে আরতির সময় আমার পিতা দালানে যাইতেন। সুতরাং তাহার ভয়ে আমাদেরও তখন সেখানে যাইতে হইত। কিন্তু প্রণামের সময় যখন সকলে ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিত আমরা তখন দাড়াইয়া থাকিতাম— আমরা প্রণাম করিলাম কি না কেহই দেখিতে পাইত না । যে শাস্ত্রে দেখিতাম পৌত্তলিকতার উপদেশ সে শাস্ত্রে আমার আর শ্রদ্ধা থাকিত না। আমার তখন এই ভ্রম হইল যে, আমাদের সমুদয় শাস্ত্র পৌত্তলিকতার শাস্ত্র। অতএব তাহা হইতে নিরাকার নিৰ্ব্বিকার ঈশ্বরের তত্ত্ব পাওয়া অসম্ভব। আমার মনের যখন এই প্রকার নিরাশ ভাব, তখন হঠাৎ এক দিন সংস্কৃত পুস্তকের একটা পাতা আমার সম্মুখ দিয়া উড়িয়া যাইতে দেখিলাম। ঔৎসুক্য বশতঃ তাহ ধরিলাম। কিন্তু তাহাতে যাহা লেখা আছে, তাহার কিছুই বুঝিতে পারিলাম না। শু্যামাচরণ ভট্টাচাৰ্য্য আমার কাছে বসিয়াছিলেন, আমি তাহাকে বলিলাম আমি ইউনিয়ান ব্যাঙ্কের কৰ্ম্ম সারিয়া শীঘ্র বাড়ীতে ফিরিয়া আসিতেছি, তুমি ইহার মধ্যে এই পাতার শ্লোক গুলানের অর্থ করিয়া রাথ, কুঠী হইতে আইলে আমাকে সব বুঝাইয়া দিবে। এই বলিয়া