পাতা:বঙ্গদর্শন-পঞ্চম খন্ড.djvu/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సిసిశి (সখি )আইল শরদ কাল কিবা স্বখময় বে। পেীর্ণমাসী নিশি শশী গগণে উদয় রে। শরদেন্দু স্বধা করে, লষ্টয়া প্রকৃতি করে, জীবন সঞ্চার করে, মহীরুহকুলে রে । আইল শরদ কাল কিবা সুখময় রে । পেীর্ণমাসী নিশি শশী গগণে উদয় রে ॥ ( সখি রে!) কহলার কুমুদ কত, পদ্ম কোকনদ যত, কিবা শোভে অবিরত, জলজাত ফুলে রে ॥ আইল শরদ কাল কিবা স্বখময় বে। পৌর্ণমানী নিশি শশী গগণে উদয় রে। —ইত্যাদি । দেখ কবির কি অtশ্চর্য্য ক্ষমতা । “শরদেন্দু স্বধাকরে, লইয়া প্রকৃতি করে, জীবন সঞ্চার করে, মহীরুহ কুলেরে ” শরদিন্দুকে পদচ্যুত করিয়া শবদে, পক্ষীর ন্যায় প্রকৃতির করে.উঠিয়া, মইরুহ কুলের জীবন সঞ্চার করিতে আরম্ভ করিয়াছেন। শরদেন্দুর আশ্চৰ্য্য শক্তি বলিতে হইবে—এক বারে ব্যাকরণ, অলঙ্কার ও বিজ্ঞানেব মুণ্ডপাত করি য়াছেন । যাহাই হউক দেখিয়া শুনিয়া বোধ হয় চিত্ত-উন্মাদিনী পাঠকদিগের এমনি চিত্তের উন্মাদ জন্মিয় দিবার • সম্ভাবনা যে আমরা বিবেচনা করি, লেখক পথে ঘাটে সতর্ক হইয়া বাহির হইবেন । অনেকেই উন্মত্ত । , গীতিকাব্য ছাড়িয়া একবার নাটকে হাত দিয়া দেখা যাউক । যে নাটক খানি হাতে উঠিল তাহার নাম বীরেন্দ্রবিনাশ । এটি বিরাট পৰ্ব্বাস্তগত কীচক বধ বিষয়িণী অপুৰ্ব্ব কথা লইয়া রচিত হইয়াছে। নাটক কুলগুরু সেক্ষপীয়র ঘঙ্গদর্শন । ( শ্রাবণ । দেশকালের প্রভেদ বড় মানেন না; হৃদয়াভ্যন্তরের চিত্রে একাগ্রচিত্ত হইয়া বাহ সংস্কারে অনেক সময়ে অমনোযোগী। প্রাচীন “ গল” বা প্রাচীন রোমানের মুখে অনেক সময়ে আধুনিক ইংরেজের মত কথা বসাইয়াছেন । বাঙ্গালী নাটককার সকলেই মনে করেন আমরা একটি ক্ষুদ্র সেক্ষপীয়র আমরাও ঐৰূপ করিলে ক্ষতি নাই । বীরেন্দ্রবিনাশের আরস্তুে বিরাটমহিষীর দুষ্ট পরিচারিকার যে কথোপকথন আছে, তাহা হইতে দুই চারি ছত্র উদ্ধৃত করিলেই আমাদের কথা প্রমাণীকৃত হইবে । কিন্তু পাঠকদিগকে সে দুঃখ দিতে পারি না ; আমরা দয়ালু। চিত্ত বলিয়াই ক্ষান্ত হইলাম । তার পর আর একখানি নাটক হাতে তুলিলাম—নাম হুকুমারী নাটক। এক স্থানে দেখিলাম, কেশব বাবুর চরিত্র লইয়া বাদবিতণ্ডা — লেখক বোধ হয় মনে করিয়াছেন যে ইহাতে নাটক বিশিষ্ট প্রকারে নাটকত্ব প্রাপ্ত হইল। তার পর একস্থানে একটী কবিতা খুজিয়া পাইলাম । নায়িকা সুকুমারী অাওড়াইতেছেন – দেখন। কেমন—শশী সুচিকন জগত ভূষণ উঠেছে ঐ উহার তুলনা, তুলনা তুল না জগতে বলন অমন কৈ ৷ পড়িতে পড়িতে বদন অধিকারীকে মনে পড়িল—“ছিই! ছিই! চাদের তুলনা।” আমাদিগের একটি বন্ধু কবিতাটি আর একটু বৃদ্ধি করিয়া দিলেন যথা—তুলনা তুল মা, বল না ললনা, কয়োনা ছলনা, চিত্তচলনী, নলিনীললনা, ভোজন হলো না, ইত্যাদি ইত্যাদি। ইহাকে বলে বাঙ্গাল সাহিত্য !