পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা } রাজু বলিল, “এতদিন সংসারের সকল ভার তোমার স্থাতে ছিল, আমরা নিশ্চিন্ত ছিলাম ; তবে তোমর8 থাকৃতে পালজির ভিটেয় ಆಫ್ರಿ! আলো জলবে না এটাও ভাল দেখায় না। তা যা তাল বোঝ, কর ; বাবা. আবার মনে না করেছ, এখানে তোমার থাকবার অসুবিধা হলো বলে তুমি বাড়ী চলে যাচ্ছ।” সৌদামিনী বলিল, “ন, কাক। তা কখনও মনে করবেন না । তোমার কত গুণ তা কি তিনি জানেন না ? এতদিন তোমরা আমাকে যে ভাবে প্রতিপালন করলে, নিজের মায়ের পেটের ভাই ও বোনকে তেমন আদর যত্নে রাখে না ; কি তার বলবো ভাই, নারায়ণ মধুসূদন তোমাকে চিরজীবী করে রাখুন। তোমার সোনার সংসার চির দিন উথলে উঠক।" এইরূপ আশীৰ্ব্বাদ করিয়া সৌদামিনী পল্লীপ্রান্তবৰ্ত্তী স্বামী গৃহে ফিরিয়া গেল। অন্ধকার কুটার দশবৎসর পরে আবার দীপা লোকে উজ্জ্বল হইয়। উঠিল। যথাসময়ে সৌদামিনী পুত্রবধূকে গৃহে আনিয়া আবার সংসার পাতিয়া বসিল । বৈচিত্র্যময় কৰ্ম্মরঙ্গভূমিতে তাহার জীবন-নাটকের নূতন দৃষ্ঠপট উন্মুক্ত হইল। মুকুন্দ দেখিল সে শৈশবে ভাল রকম লেখাপড়। শিথিতে পারে নাই, ইংরাজী বিদ্য না শিখিলে একালে তদ্রসমাজে সমাদর হয় না, অর্থসম্পদ, মানসন্ত্রম এ সকলই ইংরাষ্ট্রীশিক্ষার উপর নির্ভর করে। মুকুন্দ মুরারীকে গ্রামের মাইনর স্কুলে তৰ্ত্তি করিয়া দিল । স্নেহের প্রতিদান (! (! লেখাপড়ায় মুরারীর অনুরাগ ছিল, শৈশবেই তাহার হৃদয়ে উচ্চাভিলাষ প্রবল হইয়াছিল, সে অল্পদিনেই মাইনর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইল, মাসিক পাঁচ টাকা বৃত্তিও পাইল । ভ্রাতার কৃতকাৰ্য্যতায় উৎসাহিত হইয়া মুকুন্দ স্থির করিল সে যত দিন পরিবে মুরারীকে পড়াইবে। মুরারী যদি কোন রকমে বি এলুট। পাশ করিয়া উকীল হইয়া বসিতে পারে, তাম্ব। হইলে তাহার পিতার নাম উজ্জ্বল হইবে। নিত্যানন্দপুরের সকলেই ধন্য ধন্ত করিবে, সে পৰ্য্যন্ত নিত্যানন্দপুরের একটি ছেলেও প্রবেশিক পরীক্ষা-সাগর উত্তীর্ণ হইতে পারে নাই। ব্যবসায়প্রধান স্থান, সকলেই ছেলেদের সামান্ত লেখাপড়া শিখাইয়া বাণিজ্য-ব্যবসায়ে নিযুক্ত করিত। নিত্যানন্দপুরের স্তক্রোশ দূরে সুলতানপুর গ্রাম । সুলতানপুরের বিদ্যোৎসাহী জমিদারের অনেক চেষ্টায় সেখানে একটি এণ্টে স স্কুল স্থাপিত করিয়াছিলেন, সুলতানপুরে মুকুন্দের এক বিধবা পিশির বাড়ী। বিধবার হাতে অনেক টাকা ছিল, তিনি মহাজনী করিতেন । মুরারী পিশির বাড়ী থাকিয়া সুলতানপুরের স্কুলে পড়িতে লাগিল। মুরারী তিন বৎসর পরে, এষ্ট্রেস পাশ করিলে মুকুন্দের অনন্দের সীমা রহিল ন। মুকুন্দ তাহাকে এল এ পড়াইবার জন্য কৃষ্ণনগরে পাঠাইল । মুরারী এণ্টেন্স পাশ করিয়া বৃত্তি পায় নাই, কৃষ্ণনগরে রাথিয় তাহার শিক্ষার ব্যয়তাঁর বহন করা গ্রাম্য আড়তদারের গোমস্ত মুকুন্দের পক্ষে সহজ হইল না। মুরারীর শ্বশুর নীলরতন