পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(b" শ্রাদ্ধে সাতখানি গ্রামের কুটুম্ব নিমন্ত্ৰণ করিব ও রাঢ় হইতে তিন দল কীৰ্ত্তন আনাইব ; বৃষোৎসর্গ ও অন্ততঃপক্ষে দুইট। ষোড়শ না করিলে লোকে কি বলিবে, আর আমাদের তৃপ্তিই বা কিসে হইবে, মাই আমাদের সূৰ্ব্বস্ব ছিলেন।” মুরারি বলিল, “পরের টাকা কিছু হাতে আসিয়াছে বলিয়া কি এই ভাবে অপব্যয় করা ভাল ? সংক্ষেপে কাজ শেষ কর ।' কিন্তু মুরা রর পরামর্শে কাজ হইল না। মহাসমারোহে শ্ৰাদ্ধ শেষ হইল । ইদানীং মুদীখানার দোকান ভাল চলিতেছিল না, অথচ সংসারে অবস্থার অতিরিক্ত ব্যয় ; মুকুন্দকে বাধ্য হইয়৷ জমিদার ও শিকদারদের কাছে বাড়ী ও জমি বাধা দিয়া হাজার টাকা কর্জ লইবার ব্যবস্থা করিতে হইল। মুবারি বলিল, “তোমার বিবেচনার ক্রটীতেই দেন৷ হইল! তখন অত করে বারণ করেছিলাম, কিছুতেই শুনলে না। এখন আপনিও মজলে, আবার সবাইকে মজাবার জোগাড় করে তুলেছ। 影 তাহার স্ত্রী পদ্মাবতীকে জানাইল,“দিদি, তোমাদের ত ছেলে পুলে নাই, তোমাদের আর কিসের ভয় বল, ভাগুরের বিবেচনার দোষে আমাদেরই আণ্ডা বাচ্ছা লয়ে পথের ভিখারী হতে হচ্চে!” এ কথাও মুকুন্দের কাণে গেল। সে ভাবিল ঠিক কথাই ত! তখন মহাজনকে বুঝাইয় সে বাড়ীর ও জমার (নিজ অংশ) অৰ্দ্ধেক বাধা দিয়া টাকা লইল। অৰ্দ্ধেক অংশই যথেষ্ট বিবেচন৷ করিয়া মহাজনও তাঁহাতে আপত্তি করিল না। বঙ্গদর্শন { ১২শ বৰ্ষ, বৈশাখ, ১৩১৯ তারপর মুদিখানা সম্বন্ধে কি কর্তব্য ভাইকে জিজ্ঞাসা করিয়া ভায়ের ইচ্ছামত মুকুন্দ একটা ব্যবস্থা করিয়া লইল । छूई নামে দোকান চলিতে লাগিল । তখন দ্বিগুণ উৎসাহে মুকুন্দ ব্যবসায়ে মনঃসংযোগ করিল। কিন্তু যখন সাংসারিক অবস্থার অবনতি আরম্ভ হয়, তখন সহস্র চেষ্টাতেও তাঁহার গতিরোধ হয় না। মুকুন্দের স্ত্রীর যে কয়েকখানি অলঙ্কার ছিল, দেখিতে দেখিতে তাহাও উত্তমর্ণের সিন্ধুকে উঠিল। তবে মুরারির অংশের টাকা মুকুন্দ কোন রকমে সংগ্ৰহ করিয়া মুরারিকে দিয়াছিল। তবু কলঙ্ক ও লাঞ্ছনার হাত হইতে এড়াইতে পারে নাই ! 8 i ম। ষষ্ঠীর খেয়াল কিছু বিচিত্র। অনেক ভাগ্যবান ব্যক্তি মাথা খুড়িয়াও র্তাহার প্রসন্নতা লাভ করিতে পারেন না, পোষ্ট্য পুত্র লইয়া তাহাদিগকে বংশ রক্ষা করিতে হয় ; আবার যে দরিদ্র উদরারের সংস্থানে অসমর্থ, তাহার কৃপাসিন্ধুর প্লাবনে তাহাকে নাকানি চুবানি খাইতে হয়! ছেলে মেয়ের নিবারণ, ক্ষান্ত, আন্না প্রভৃতি নিমেধার্থসূচক নামকরণ করিয়াও হতভাগ্যের নিষ্কৃতি নাই, তাই কবি দুঃখ করিয়৷ গাহিয়াছেন— “বিয়ে কল্পেই পুত্র কন্যা, আসে যেন প্রবল বঙ্গী, পড়াতে আর বিয়ে দিতে হই সৰ্ব্বশ্বাস্ত! প্রাণুট রাখিতে "হোল প্রাণান্ত' ] মুকুন্দ বংশষ্ট্রক্ষায় হতাশ হয়। যখন হাল ছাড়িয়াছিল, সেই সময় মা ষষ্ঠ