পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় সংখ্যা । J সম্মান• ক্রমে তুচ্ছ হইতে তুচ্ছতম হইয়f আসিবে । 9 আমাদের সমস্ত সমাজ প্রধাৰতই দ্বিজসমাজ ; ইহা যদি না হয়, সমাজ যদি শূদ্র সমাজ হয়, তবে কয়েকজনমাত্র ব্রাহ্মণকে লইয়। এ সমাজ যুরোপীয় অাদর্শেও খৰ্ব্ব হইবে, ভারতবর্ষীয় আদর্শেও খৰ্ব্ব হইবে। সমস্ত উন্নত সমাজই সমাজস্থ লোকের নিকট প্রাণের দাবী করিয়া থাকে, আপনাকে নিকৃষ্ট বলিয়। স্বীকার করিয়া অtরামে জড়ত্বসুখভোগে যে সমাজ আপনার অধিকাংশ লোককে প্রশ্রয় দিয়া থাকে, সে সমাজ মরে, এবং না-ও যদি মরে, তবে তাহার মরাই ভাল । যুরোপ কম্মের উত্তেজনায়, প্রবৃত্তির উত্তেজনায় সৰ্ব্বদাই প্রাণ দিতে প্রস্তুত— আমরা যদি ধৰ্ম্মের জন্ত প্রাণ দিতে প্রস্তুত না হই, তবে সে প্রাণ অপমানিত হইতে থাকিলে অভিমান প্রকাশ কর। আমাদের শোভা পায় না । য়ুরোপীয় সৈন্ত যুদ্ধামুরাগের উত্তেজনায় ও বেতনের লোভে ও গৌরবের আশ্বাসে প্রাণ দেয়, কিন্তু ক্ষত্রিয় উত্তেজনা ও বেত নের অভাব ঘটিলেও যুদ্ধে প্রাণ দিতে প্রস্তুত থাকে। কারণ, যুদ্ধ সমাজের অত্যাবগুক কৰ্ম্ম, এক সম্প্রদায় যদি নিজের ধৰ্ম্ম বলিয়াই সেই কঠিন কৰ্ত্তব্যকে গ্রহণ করেন, তবে কন্মের সহিত ধৰ্ম্মরক্ষা হয়। দেশমৃদ্ধ সকলে মিলিয়াই যুদ্ধের জন্ত প্রস্তুত হইলে মিলিটারিজমের প্রাবল্যে দেশের গুরুতর অনিষ্ট ঘটে । বাণিজ্য সমাজরক্ষার পক্ষে অত্যাবগুক ব্রাহ্মণ । X80. কৰ্ম্ম । সেই সামাজিক আবশ্যকপালনকে এক সম্প্রদায় যদি আপন সাম্প্রদায়িক ধৰ্ম্ম, আপন কৌলিক গৌরব বলিয়া গ্রহণ করেন, তবে বণিগৰ্বত্তি সৰ্ব্বত্রই পরিব্যাপ্ত হইরা সমাজের অন্তান্ত শক্তিকে গ্ৰাস করিয়া ফেলে না । তা ছাড়া কৰ্ম্মের মধ্যে ধৰ্ম্মের আদর্শ সৰ্ব্বদাই জাগ্রত থাকে। ধৰ্ম্ম এবং জ্ঞানার্জন, যুদ্ধ এবং রাজকাৰ্য্য, বাণিজ্য এবং শিল্পচর্চা, সমাজের এই তিন অত্যাবগু্যক কৰ্ম্ম । ইহার কোনটাকেই পরি ত্যাগ করা যায় না । ইহার প্রত্যেকটিকেই ধৰ্ম্মগৌরর, কুলগৌরব দান করিয়া সম্প্রদায়বিশেষের হস্তে সমর্পণ করিলে তাহাদিগকে সীমাবদ্ধও করা হয়, অথচ বিশেয উৎকর্ষ সাধনেরও অবসর দেওয়া হয় । কৰ্ম্মের উত্তেজনাই পাছে কৰ্ত্ত হইয়৷ আমাদের আত্মাকে অভিভূত করিয়া দেয়, ভারতবর্ষের এই আশঙ্কা ছিল । তাই ভারতবর্ষে সামাজিক মানুষটি লড়াই করে, বাণিজ্য করে, কিন্তু নিত্যমানুষটি—সমগ্র মামুযটি শুদ্ধমাত্র সিপাই নহে, শুদ্ধমাত্র বণিক্‌ নহে। কৰ্ম্মকে কুলব্রত করিলে, কৰ্ম্মকে সামাজিক ধৰ্ম্ম করিয়া তুলিলে, তবে কৰ্ম্মসাধনও হয়, অথচ সেই কৰ্ম্ম আপন সীমা লঙ্ঘন করিয়া, সমাজের সামঞ্জস্ত ভঙ্গ করিয়া, মামুষের সমস্ত মনুষ্যত্বকে আচ্ছন্ন করিয়া, আত্মার রাজসিংহাসন অধিকার করিয়া বলে না । যাহার। দ্বিজ, তাহাদিগকে একসময় কৰ্ম্ম পরিত্যাগ করিতে হয়। তখন তাহার। আর ব্রাহ্মণ নহেন, ক্ষত্রিয় নহেন, বৈশু নহেন—তথন তাহারা নিত্যুকালের মামুষ—