পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉8V。 তখন কৰ্ম্ম তাছাদের পক্ষে আর ধৰ্ম্ম নহে, সুতরাং অনায়াসে পরিহার্য্য। এইরূপে দ্বিজসমাজ বিষ্ঠা এবং অবিদ্য উভয়কেই রক্ষা করিয়াছিলেন–র্তাহারা বলিয়াছিলেন, অবিস্তয়া মৃত্যুং তত্ত্ব বিস্কয়ামৃতমশ্ন তে— অবিদ্যার দ্বারা মৃত্যু উত্তীর্ণ হইয়া বিস্কার দ্বারা অমৃত লাভ করিবে। এই চঞ্চলসংসারই মৃত্যুনিকেতন, ইহাই অবিস্তা—ইহাকে উত্তীর্ণ হইতে হইলে ইহার ভিতর দিয়াই যাইতে হয়—কিন্তু এমন ভাবে যাইতে হয়, ধেন ইহাই চরম ন হইয়। উঠে । কৰ্ম্মকেই একান্ত প্রাধান্ত দিলে সংসারই চরম হইয়া উঠে ; মৃত্যুকে উত্তীর্ণ হওয়া যায় না, অমৃত লাভ করিবার লক্ষ্যই ভ্ৰষ্ট হয়, তাহার অবকাশই থাকে না, এইজন্তই কৰ্ম্মকে সীমাবদ্ধ করা, কৰ্ম্মকে ধৰ্ম্মের সহিত যুক্ত করা, কৰ্ম্মকে প্রবৃত্তির হাতে, উত্তেজনার হাতে, কৰ্ম্মজনিত বিপুল বেগের হাতে ছাড়িরা না দেওরা ; এবং এইজন্তই ভারতবর্ষে কৰ্ম্মভেদ বিশেষ বিশেষ জনশ্রেণীতে নির্দিষ্ট করা । ইহাই আদর্শ। ধৰ্ম্ম ও কৰ্ম্মের সামঞ্জস্ত রক্ষা করা এবং মানুষের চিত্ত হইতে কৰ্ম্মের নানাপাশ শিথিল করিরা তাহাকে একদিকে ংসারত্ৰতপরায়ণ, অন্যদিকে মুক্তির অধিকারী করিবার অন্ত কোন উপায় ত দেখি না । এই আদর্শ উন্নততম আদর্শ এবং ভারতবর্ষের আদর্শ । এই আদর্শে বর্তমান সমাজকে সাধারণভাবে অধিকৃত ও চালিত করিবার উপায় কি,তাহ আমাদিগকে চিত্ত৷ করিতে হইবে । সমাজের সমস্ত বন্ধন ছেদন করিয়া কৰ্ম্মকে ও প্রবৃত্তিকে উদ্ধাম করিয়া तक्रक्शन । [ ২য় বর্ষ, আষাঢ় । তোলা—সেজন্ত কাহাকেও চেষ্টা করিতে হয় না। সমাজের সে অবস্থা জড়ত্বের দ্বারা, শৈথিল্যের দ্বারা আপনি আসিতেছে। বিদেশী শিক্ষার প্রাবল্যে, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিকূলতায় এই ভারতবর্ষীয় আদর্শ সত্বর এবং সহজে সমস্ত সমাজকে অধিকার করিতে পারিবে না, ইহা আমি জানি। কিন্তু যুরোপীয় আদর্শ অবলম্বন করাই যে আমাদের পক্ষে সহজ, এ দুরাশাও আমার নাই । সৰ্ব্বপ্রকার আদর্শ পরিত্যাগ করাই সৰ্ব্বাপেক্ষী সহজ—এবং সেই সহজ পথই আমরা অবলম্বন করিয়াছি। যুরোপীয় সভ্যতার আদর্শ এমন একটা আলগা জিনিষ নহে যে, তাহ পাক ফলটির মত পাড়িয়া লইলেই কবলের মধ্যে অনায়াসে স্থান পাইতে পারে । সকল পুরাতন ও বৃহৎ আদর্শের মধ্যেই বিনাশ ও রক্ষার একটি সামঞ্জস্য আছে । অর্থাৎ তাহার যে শক্তি বাড়াবাড়ি করিয়া মরিতে চায়,তাহার অন্তশক্তি তাহাকে সংযত করিয়া রক্ষা করে । আমাদের শরীরেও যন্ত্রবিশেষের যতটুকু কাজ প্রয়োজনীয়, ভাছার অতিরিক্ত অনিষ্টকর, সেই কাজটুকু আদায় করিয়া সেই অকাজটুকুকে বহিষ্কৃত করিবার ব্যবস্থা আমাদের শরীরতন্ত্রে রহিয়াছে ; পিত্তের দরকারটুকু শরীর লয়, অদরকারটুকু বর্জন করিবার ব্যবস্থা করিতে থাকে । এই সকল সুব্যবস্থা অনেকদিনের ক্রিয়াপ্রক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দ্বারা উৎকর্ষ লাভ করিয়া সমাজের শারীরবিধানকে পরিণতি দান করিয়াছে। অমিয়া অন্তের নকল করিবার