পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sडूfनश्वा । ] .চতুর্থ উদাহরণ। বিমাতা যখন সপত্নীপুভ্রের কোনোপ্রকার, ব্যক্ত সদগুণ দেখিয়া তাহাকে ক্রোড়ে লইয়া আদর করেন, তখন সেরূপ সহেতুক ভালবাসাকে বলা যাইতে পারে মনের ভালবাসা। পক্ষাত্তরে, স্বয়াত বখন অপরাধী পুত্রের কোনোপ্রকার গুণাগুণের প্রতি কিছুমাত্র দৃকপাত না করিয়া তাহাকে ক্রোড়ে তুলিয়া লইয়া মুখে তৎসনা করেন, অথচ মনে মনে তাহার মুখচুম্বন করেন, তখন সেরূপ অহৈতুক ভালবাসাকে বলা যাইতে পারে প্রাণের ভালবাসা । তাছা যেন হইল—এখন জিজ্ঞাস্ত এই যে, রাধাকৃষ্ণের ভালবাসাকে কোন শ্রেণীর ভালবাসা বলিব ? তাহ প্রাণের ভালবাসা, না মনের ভালবাসা ? প্রেমোন্মত্ত ব্যক্তির মনের ভাব যদি এইরূপ হর যে, “কি-গুণে উহাকে আমি ভালবাসি তাহ জানি না—জানি মাত্র এই যে, উহাকে দেখিলে প্রাণ পাই— না দেখিলে প্রাণ-বিয়োগ হর”, তবেই বলিব যে, তাহার ভালবাসা প্রাণের ভালবাস। পক্ষান্তরে, তাহার মনের তাৰ যদি এরূপ হয় যে, “এই গুণে উহাকে আমি এত ভালবাসি", তবে তাহ মনের ভালবাসা । পুরাণের মতানুসারে রাধাকৃষ্ণের ভালবাসা নিতান্ত-পক্ষেই জন্মজন্মাস্তরের ভালবাসা ; সুতরাং কি-গুণে দোহে দোহাকে ভাল বালিতেছেন, দোহা’র তাহ ন জানিতে পারিবারই কথা। এই হিসাবে দোহার ভালবাসা প্রাণের ভালবাসা। এটাও কিন্তু দেখিতে পাওয়া যায় বে, এক দিকে রাধিকার অনুপম রূপলাবণ্য, মার সার সত্যের জললোচনা , ২০:শ এক দিকে কৃষ্ণের মনোহর ত্রিভঙ্গ ঠাম, বাণবিদ্ধকারী নয়ন-ভঙ্গী এবং স্বমধুর মুরলীধ্বনি—দুই দিকের এই দুইরূপ মোহন গুণের গঙ্গা-যমুনার সঙ্গম হইতে তুমুল তরঙ্গ উঠিয়া ভালবাসাকে ক্ষণে দুখস্বপ্নের স্বর্গে তুলিতেছে, ক্ষণে দুঃস্বপ্নের পাতালে নাবাইতেছে ; সাগরমন্থন হইতে স্বধাও যেমন—হলাহলও তেমনি—দুই-ই ছুই কুল ছাপাইয়। উদ্বেলিত হইয়া উঠিতেছে। এইরূপ অধীর ধাচা’র ভালবাসা বিক্ষেপাত্মক মনের ভালবাসা । রাধাকৃষ্ণের ভাল বাসাতে প্রাণের অব্যক্ত সংস্কার এবং মনের উদ্রিক্ত বাসনা এরূপ গায়ে-গায়ে লিপ্ত হইয়া রছিয়াছে যে, দুয়ের মধ্যে ছেদ-রেখার স্থানাভাব । উপরের উদাহরণগুলিতে প্রমাণ হইতেছে এই যে, মনঃক্রিয়া এবং প্রাণক্রিয়ার মধ্যে প্রভেদ কেবল ব্যক্তাব্যক্তের তারতম্য লইয়া, তা বই,বস্তু-পক্ষে দুয়ের মধ্যে কোনো প্রভেদ নাই ; বস্তু-পক্ষে প্রভেদ না থাকিৰারই কথা—কেন না,প্রাণ এবং মন, উভয়ে একই জীবাত্মার দুই অন্তঃকরণ-বৃত্তি ; তা বই, ও দুই বৃত্তি দুই শ্রেণীর দুই বৃত্তিও নহে, দুই ব্যক্তির দুই বৃত্তিও নহে। প্রাণ এবং মনের মধ্যে বস্তুপক্ষে প্রভেদ না থাকিলেs —গুণ-পক্ষে প্রভেদ আছে, তাহ দেখিতেই পাওয়া যাইতেছে। সে প্রভেদ এই যে, মন ব্যক্ত-চেতন, প্রাণ অব্যক্ত-চেতন । মন ব্যক্ত-চেতন বটে, কিন্তু স্বব্যক্ত-চেতন নহে ;—মন অৰ্দ্ধব্যক্ত-চেতন স্বব্যক্তচেতন কে ? না বুদ্ধি। এইজন্ত, মন এবং প্রণের মধ্যগত একাত্মভাৰটিকে