পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

N)న8 তাহাদের মৃত্যু, তাছা অধ্যাপক বক্স স্থির করিয়াছেন। ফাহরণহিটের ১৩০ অংশ উষ্ণ জলীয় বাম্পের সংস্পর্শে আসিলে, অধিকাংশ উদ্ভিদেরই মৃত্যু উপস্থিত হয় দেখা গিয়াছে। দ্রবাবিশেষের অবসাদকর ও মাদক ক্রিয়ার সহিত আমরা সকলেই অল্পধিক পরিচিত। ক্লোরোফরম্ বা অপর বিষ প্রয়োগ কর, প্রাণিদেহ অসাড় হইয়া পড়িবে এবং মাএ প্রচুর হইলে মৃত্যু ঘটিবে । এমোনিয়া বা অপর কোন ও উত্তেজক পদার্থের সাহায্য গ্রহণ কর, শরীরের অবসাদ নাশ ও উত্তেজনা বৃদ্ধি পাইবে । অধ্যাপক বস্থ উদ্ভিদদেহে নানা উত্তেজক ও অবসাদকর পদার্থের ক্রিয় পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছেন, প্রাণি ও উদ্ভিদ দেহে এই পদার্থগুলির কার্য্য অবিকল এক । উদ্ভিদদেহে উত্তেজক পদার্থ প্রয়োগ করিলে তাহার সাড়ের প্রবল তা স্পষ্ট বাড়িয় উঠে এবং বিষ বা অপর অবসাদজনক পদার্থের প্রয়োগে প্রাণীর দ্যায় উদ্ভিদের ও অবসাদ লক্ষণ দেখা যায় । বিষের মাত্রাট। প্রচুর হইলে ইহারও মৃত্যু ঘটে। প্রয়োগমাত্রার উপর ঔষধের ক্রিয়। অনেক নিভর করে । যে ঔষধ স্বল্পমাত্রায় গ্রহণ করিলে প্রাণী রোগমুক্ত হয়, তাহারই অযথাপ্রয়োগে মৃত্যু আসিয়া উপস্থিত হয়। বেলেডোন, আসেনিক্‌ ও অহিফেন প্রভৃতি দ্রব্য মাত্রাভেদে কিপ্রকারে কখনও ঔষধের এবং কথনও বিষের কাজ করে, তাহা সকলেই জানেন । অধ্যাপক বন্ধ উদ্ভিদেও অবিকল অমুরূপ ক্রিয় প্রত্যক্ষ করিয়াছেন। উদ্ভিদদেহে অল্পমাত্রায় বিষ প্রয়োগ কর, উদ্ভিদ উত্তেজিত হইয় প্রবল বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, কাৰ্ত্তিক । সাড়া দিতে থাকিবে । বিষের প্রয়োগমাত্রা বৃদ্ধি কর, উদ্ভিদ অবসর হইয়া পড়িবে এবং শেষে সাড়ানির্দেশক রেখাচিত্রে মৃত্যুরেখা অঙ্কিত হইয়া পড়িবে। আঘাত-উত্তেজনায় সাড়া দিবার ক্ষমতা যে সজীব পদার্থমাত্রেরই একটি বিশেষত্ব, তাহ ইতিপূৰ্ব্বে জানা ছিল। কিন্তু প্রাণী, উদ্ভিদ ও ধাতব পদার্থের সাড়ার মধ্যে যে এতটা সোসাদৃশু থাকিতে পারে, তাহ কোন জীববিদ এ পর্য্যন্ত অনুমান ও করিতে পারেন নাই । প্রাণীর ছায় ধাতু ও উদ্ভিদের বেদনাবোধশক্তি আছে কি না, সে সম্বন্ধে কোন ৪ কথা এখন বলা চলে না,— কিন্তু আঘাতজাত বেদনায় সচেতন প্রাণী ষে সকল লক্ষণ প্রকাশ করে, সেই আঘাতে উদ্ভিদ এবং ধাতুও ষে তদনুরূপ চিহ্লের বিকাশ করে, তাহা অার এখন অস্বীকার করিবার উপায় মাঠ । এতদ্ব্যতীত জীবনক্রিয়ার মূলটা যে সাড়া-দে ওয়া-ব্যাপারেই আছে, তাহাও অধ্যাপক বসুর পরীক্ষায় জানা গিয়াছে । জীবনক্রিয়ার কথা উঠিলেহ, প্রাচীন ও আধুনিক জীববিদগণ “জীবনী শক্তি” নামে একটা কল্পনাতীত ব্যাপারের অস্তিত্ব মানিয়া লইয়া জৈবক্রিয়ামাত্রেরই ব্যাখ্যা দিয়া আসিতেছিলেন, কিন্তু এই “জীবনী শক্তিটা” ( Witalism ) যে কি, জিজ্ঞাসা করিলে দেহবিদগণ নিরুওর পাকিতেন। কোন পথে চলিলে পণ্ডিতগণের মনোরাজ্যের অধিবাসী সেই জীবনী শক্তির বাস্তবিক সাক্ষাৎ পাওয়া যাইবে, অধ্যাপক বসুর নবাবিষ্কার তাহা শীঘ্রই নির্দেশ করিয়া দিবে বলিয়া আশা হই