পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৫৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6*७२ বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, মাঘ । আর, তাহা হইতেই আসিতেছে এই ষে, দর্শনেঞ্জিয় জ্ঞানপ্রধান, শ্রবণেন্দ্রিয় শক্তিপ্রধান, স্পর্শেন্দ্রিয় সত্তাপ্রধান । উপরে যাহা সংক্ষেপে—একপ্রকার সাটেসোটে— বলিলাম, তাহার সমস্ত বিবরণ পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে অনুশীলন করিতে হইলে তাহা দুই-এক ছত্রের কৰ্ম্ম নহে ; তাহার আলোচনায় অধ্যায়কে-অধ্যার পার হইয়া যাইতে থাকিলেও—যতগুলা অধ্যায় ছাড়াইয়া আসা যাইবে, ততগুলা ভাবী অধ্যায়ের খোরাক জমা হইতে থাকিবে— কিছুতেই আয় জের মিটিবে না। মাঝপথে কালবিলম্ব করা শ্রেয়স্কর নহে, তাহা আমি গোড়াতেই বলিয়াছি—বলিয়া-কহিয়। তবে এ কাৰ্য্যে হস্তক্ষেপ করিয়াছি। বর্তমান প্রসঙ্গে এক্ষণে কেবল একটি বিষয় বলিবার আছে, সেইটি হইয়। চুকিলেই পাথেয় সংগ্রহের দায় হইতে এ-যাত্র আমি অব্যাহতি পাইতে পারি। সেটি হ’চ্চে সত্তা, শক্তি এবং জ্ঞান, তিনের সামঞ্জস্ত । আমি যেরূপ ব্যক্তি এবং আমার যেরূপ শক্তি, তাহা ছাড়াইয়া আমার জ্ঞানের আদর্শ যদি এত উচ্চ হইয়া ওঠে যে, কোনো গতিকেই আমি তাহা হাত বাড়াইয়। নাগাল পাইতে পারি না, এক কথায়—জ্ঞান যদি সত্তা এবং শক্তিকে,অথবা যাহা একই কথা—প্রাণ এবং যদকে, অনেক-হীত নীচে ফেলিয়া মহোচ্চ সত্যের শিখরে আরোহণ করে, তাহা হইলে আমার জ্ঞানের সেই উচ্চ আদর্শ আমার মধ্যে একপ্রকার উন্ট ফল উৎপাদন করে—আপন মহোজ্জল আলোকে আমার অপদার্থতা এবং অক্ষমতা ফুটাইয়া তুলিয়া আমার মনোমধ্যে অশান্তি এবং বিষাদের উৎস উন্মুক্ত করিয়া দ্যায়। কিন্তু তাহাও স্বীকার—তথাপি জ্ঞানের আলোক আমার চক্ষের সন্মুখ হইতে একটুও সরাইয়া রাখা আমার প্রার্থনীয় হইতে পারে না। কেন না, তাহা করিলে আপাতত এক প্রকার মনকে-প্রবোধ-দেওয়া-রকমের শান্তুি লাভ করা যাইতে পারে বটে, কিন্তু তাহাতে উন্নতির দ্বারে কপাট পড়িয়া গিয়া তলে তলে অধোগতির সোপান প্রস্তুত হইতে থাকে। এরূপ স্থলে সৎপরামর্শ হ’চ্চে—নীচের নীচের ধাপ মাড়াইয়া জ্ঞানের উচ্চশিখরে শক্তিকে এবং সত্তাকে—মনকে এবং প্রাণকে টানিয় তোলা । মনে কর, একজন চাসা’র বড়ই ইচ্ছা গিয়াছে যে, সে জমিদার হয় । সে আপনার লাঙলের কাজে জলাঞ্জলি দিয়া অষ্ট প্রহর কেবল জমিদারী সেরেস্তায় আনাগোন করে, আর, সেই গতিকে জমিদারী কার্য্যেয় প্রণালী-পদ্ধতি-বিষয়ে তাহার অভিজ্ঞতা জন্মিয়াছে মন্দ না । কিন্তু হইলে হইবে কি—এক-কাঠা জমি ক্রয় করে, সে সঙ্গতি তাহার নাই , যৎকিঞ্চিৎ যাহা তাহায় ধান্যের পুজি ছিল—কৃষিকার্য্যে অনবধানত গতিকে সে তাহ অনেকদিন হইল, খোয়াইয়৷ বসিয়া আছে। এ অবস্থায় তাহার কর্তব্য হ’চ্চে— প্রথমত জমিদারী সেরেস্তায় ঘুরিয়াবেড়ানো বন্ধ করা । দ্বিতীয়ত কৃষিকার্য্যে উঠিয়াপড়িয়া লাগিয়া ধান্তের সংস্থান করা। তৃতীয়ত ধাম্ভের মহাজনগিকে আদর্শ করিয়া অল্প-স্বল্প বাণিজ্য-ব্যবসায়ে প্রবৃত্ত হওয়া চতুর্থত যখন সে দেপ্তৰে হাতে