পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৫৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একাদশ সংখ্যা । ] তখন ললাটদেশে তৃতীয় নয়ন প্রকাশ করিলেন ; এবং সেই নয়নের দীপ্তি বা তেজে পর্বত, অরণ্য প্রভৃতি দগ্ধ হইতে লাগিল। দেবী তখন মহাদেবের চক্ষু-দুইটি হইতে ক্রীড়াবিদ্যস্ত কর অপসারণ করিলেন । মদন ভস্মের গল্প মহাভারতে নাই ; কিন্তু এই উপাদানই উহার মূল । তিলোত্তমার অমুসন্ধানে চারিদিকে মুখ ফিরাইতে গিয়া চতুমুৰ্থ হইয়াছিলেন, লিখিত হইয়াছে ; এখনও পৰ্য্যস্ত ব্ৰহ্মাকে ছাড়াইয়া উঠিয়া পঞ্চবক্ত, হন নাই । অন্তর দেখিতে পাই যে, মম্বন্তরসময়ে কৃষ্ণবর্ণ নারায়ণ উহার শুভ্র কণ্ঠে হাত দিয়াছিলেন বলিয়া, মহাদেব নীলকণ্ঠ হইয়াছিলেন । বুঝিতে পারা গেল যে, এই ইতিহাস সাগরমন্থনের পৌরাণিক গল্পের পুৰ্ব্বে । এক দিকে ব্ৰহ্মা যেমন স্তবস্তুতি করিয়া নীচে পড়িয়া গেলেন, সেইরূপ পিনাকধারী শর্বের মহিমাও অদ্যপ্রকার ইতিহাস দিয়া মহাদেবে আরোপিত হইল। এই বর্ণনায় শর্বিদেব এক নহেন, সঙ্গে সঙ্গে বজ্ৰপাণি বুদ্ধও মহাদেবের নব ব্রহ্মত্বে নির্মাণলাভ করিলেন। বুদ্ধমুৰ্বির সহিত এক তার কথ। পরে লিখিতেছি। ধীরে ধীরে নূতন নূতন ব্যাখ্যা দিয়া যে, নবদেবতার স্থষ্টি হইল, তাহাতে আর সন্দেহ থাকে না । যদি কেহ বলেন যে, মহাভারতের এই অধ্যায়গুলি সৰ্ব্বৈব প্রক্ষিপ্ত, তাহাতেও মহাদেবের নূতনত্ব দূরীভূত হয়.না। এই কথাগুলি যখুন রামারণে এবং পুরাণে অধিক পরবৃত। ಕ್ಯಕೆ! উঠিয়াছে, তখন q. উহ। রামায়ণ এবং পুরাণগুলির পূর্ববর্তী, তাহ অস্বীকার করা যায় না । অধ্যায়গুলিকে শিবপূজা L ● ጫጫ প্রক্ষিপ্ত করিতে গেলে, মহাভারতের সময়েও, মহাদেবের" নধবিগ্রহ প্রকাশ পায় নাই, এই কথা স্বীকার করিতে হয়। প্রক্ষিপ্তের তর্কট হয় ত উঠিবে না । গুপ্তরাজাদের চতুর্থশতাব্দীর প্রারম্ভের প্রস্তরলিপিতে নুতন মহাদেবের তত প্রতিষ্ঠা দেখিতে পাই না । কিন্তু উ হাদের পঞ্চম এবং ষষ্ঠ শতাব্দীর লিপিতে মহাদেবের প্রভাব সুবিস্তৃত। ৪০১ খৃষ্টাব্দের পরে, দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত, শস্তুর জন্ত, পৰ্ব্বতের গুহায় আয়তন নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন । তাহার পর স্কন্দগুপ্তের সময় সম্পূর্ণ পৌরাণিকবর্ণনাযুক্ত মহাদেব পাই । যশোধৰ্ম্মার ৫৩৩ খৃষ্টাব্দের মাণ্ডাসোরের প্রস্তরলিপির আরম্ভেই দেখিতে পাই, “স জয়তি জগতাং পতিঃ পিনাকী” । এই প্রস্তরলিপিতে আছে – স্বয়স্কৃভূতানাং স্থিতিলয়সমুৎপত্তিবিধিযু প্ৰযুক্তে যেন জ্ঞাং বহুতি ভুবনানাং বিধৃতয়ে । পিতৃত্বঞ্চনীতে৷ জগতি গরিমাণং গময়ত সশস্তুভুয়াংসি প্রতিদিশতু ভদ্রাণি তবতাম্। এস্থানে ব্ৰহ্মা একেবারে মহাদেবের আজ্ঞাবাহক ; ব্রহ্মার গৌরব, প্রায় লুপ্ত হইয়। গিয়াছে। এই প্রস্তরলিপিতে একটা পরবর্তী শ্লোকে মহাদেবকে নাগবেষ্টিত বলিরাও বর্ণনা করা হইয়াছে ; এই স্বরূপটির উৎপত্তির কথা পরে বলিতেছি। তর্ক উঠিতে পারে যে, শত শত প্রস্তরলিপির মধ্যে হয় ত অল্প কয়েকখানি পাওয়া গিয়াছে, তখন উহা ੋਣ দৃষ্টান্ত দেওয়া কি সঙ্গত ? উত্তরে এই কথা বলিতে পারি যে, একদিকে তৃতীয় শতাব্দীর পূর্বের সাহিত্যে যখন নুতন দেবতার পরিষ্কার নিদর্শন পাওয়া যায় না,