*३ মহেন্দ্র সেখান হইতে কোনমতে डेब्रिा পালাইতে পারিলে বাচে, কিন্তু হঠাৎ উঠিতে পারিল না। মার বিছানার প্রান্তে অন্ধকারে , নিস্তব্ধ হইয়া বসিয়া রহিল। অনেকক্ষণ পরে রাজলক্ষ্মী কহিলেন--- “আজ রাত্রে ত এখানেই আছিস্ ?” মহেন্দ্র কহিল—“না ।” রাজলক্ষ্মী জিজ্ঞাসা করিলেন—“কখন যাবি ?” মহেন্দ্র কহিল—”এখনি ৷” রাজলক্ষ্মী কষ্টে উঠিয়া বসিয়া কহিলেন —“এখনি ? একবার বেীমার সঙ্গে ভাল করিয়া দেখা-ও করিয়া যাবি না ?” মহেন্দ্র নিরুত্তর হইয়া রহিল। রাজলক্ষ্মী কহিল, “এ কয়টাদিন বৌমার কেমন করিয়া কাটিয়াছে, তাহ কি তুই একটু বুঝিতেও পারিলি না ? ওরে নির্লজ্জ, তোর নিষ্ঠুরতায় আমার বুক ফাটিয়া গেল !”— বলিয়া রাজলক্ষ্মী ছিন্নশাখার মত বিছানায় গুইয়া পড়িলেন । মহেন্দ্র মার বিছানা ছাড়িয়া বাহির হইয় গেল। অতি মদুপদে নিঃশব্দগমনে সে সিড়ি দিয়া তাহার উপরের শয়নঘরে চলিল। আশার সহিত দেথা হয়, এ তাহার ইচ্ছা ছিল না । মহেন্দ্র উপরে উঠিয়াই দেখিল, তাহার শয়নগৃহেয় সম্মুখে যে ঢাকা ছাদ অাছে, সেইখানে আশা মাটিতে পড়িয়া । সে মহেঞ্জের পায়ের শব্দ পায় নাই, হঠাৎ তাহাকে সম্মুখে উপস্থিত দেখিয়া তাড়াতাড়ি কাপড় পারিয়া লইয়া উঠিয়া বসিল । এই সময়ে মহেন্দ্র যদি একটিবার ডাকিত “চুনি”—তবে তখনি रुङ्गाल नि । [8जार्छ সে মহেঞ্জের সমস্ত অপরাধ যেন নিজেরই মাথায় তুলিয়া লইয়া ক্ষমাপ্রাপ্ত পরাধিনীর মত মহেঞ্জের দুই পা জড়াইয়া ধরিয়া তাহার জীবনের সমস্ত কান্নাটা কঁাদিয়া লইত। কিন্তু মহেন্দ্র সে প্রিয়নাম ডাকিতে পারিল না । যতই সে চেষ্টা করিল, ইচ্ছা করিল, যতই সে বেদন পাইল, এ কথা ভুলিতে পারিল না যে, আজ আশাকে আদর করা শূন্তগর্ভ পরিহাসমাত্র। তাহাকে মুখে সাত্বনা দিয়া কি হইবে-যখন বিনোদিনীকে পরিত্যাগ করিবার পথ মহেন্দ্র নিজের হাতে একেবারে বন্ধ করিয়া দিয়াছে ! আশা সঙ্কোচে মরিয়া গিয়া বসিয়া রহিল । উঠিয়া দাড়াইতে, চলিয়। যাইতে, কোনপ্রকার গতির চেষ্টামাত্র করিতে, তাহার লজ্জাবোধ হইল। মহেন্দ্র কোন কথা না বলিয়া ধীরে ধীরে ছাদে পায়চারি করিতে লাগিল । কৃষ্ণপক্ষের আকাশে তখনে চাদ ওঠে নাই ;–ছাদের কোণে একটা ছোট গামলায় রজনীগন্ধার গাছে দুইটি ডাটায় ফুল ফুটিয়াছে। ছাদের উপরকার অন্ধকার-আকাশে ঐ নক্ষত্রগুলি – ঐ সপ্তর্ষি, ঐ কালপুরুষ,– তাহাদের অনেক সন্ধ্যার অনেক নিভুত প্রেমাভিনয়ের নীরব সাক্ষী ছিল, আজও তাম্বারা নিস্তব্ধ হইয়। চাহিয়৷ রহিল । মহেন্দ্ৰ ভাবিতে লাগিল, মাঝখানের কয়টিমাত্র দিনের বিপ্লবকাহিনী এই আকাশভর অন্ধকার দিয়া মুছিয়া ফেলিয়। যদি আগেকার ঠিক সেই দিনের মত এই খোলা ছাদে মাছর পাতিয়া আশার পাশে আমার সেই চিরন্তন স্থানটিতে অতি অনা
