পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

; তৃতীয়-সংখ্যা । ] আলোচনা । ૭૪ নাম সংস্কৃতভাষা হইল এবং সাধারণ লোকে j্যাকরণদ্বারা অনুশাসিত না হইয়া যেরূপ রাভাবিক ভাষাতে কথা বলিত, তাহার নাম চাষা অথবা ‘প্রাকৃত’-ভাষা হইল । প্রাকৃত-শব্দের অর্থ স্বাভাবিক অর্থাৎ iীলোক এবং সাধারণ লোকে শিক্ষাপ্রাপ্ত হইয়া স্বভাবত যেরূপ কথা বলে, তাহার |াম প্রাকৃত-ভাষা । আর শিক্ষিত লোকে মরুপ মাজ্জিতভাষাতে কথা বলে এবং খে, তাহার নাম সংস্কৃতভাযা। প্রাকৃত মুষ্য বলিলে তাহাকে বুঝায়, যাহার শিক্ষাারা জ্ঞানবুদ্ধির উৎকর্ষ জন্মে নাই। আর অপ্রাকৃত মনুষ্য তাহাকে বলে, যাহার শিক্ষা|ার জ্ঞানবুদ্ধি বিশিষ্টরূপ বিকাশ প্রাপ্ত ইয়াছে। ভাষাতত্ত্ব বাঙলা, হিন্দি ভূতিকে সংস্কৃতের কথিতভাষা বলিতেছে। iির সংস্কৃতের কথিতভাষার নাম প্রাকৃত, তএব বাঙলা, হিন্দি প্রভৃতিকে ‘প্রাকৃত’ wলবে না কেন ? স্থানে স্থানে কালে কালে ব্যক্তিবিশেবে বিশেষ বিশেয কারণে কথিতভাষা কিঞ্চিৎ কঞ্চিৎ বিভিন্ন হয়, কিন্তু লিখিতভাষা ব্যাকরণের শাসনে স্থির থাকে। এইজন্য আমাদেয় লিখিত সংস্কৃতভাষা স্থির অাছে, কিন্তু তাহার কথিতভাষা বিভিন্ন দেশে এবং বিভিন্ন কালে মাগধী, শৌরসেনী, পালি, ংলা, হিন্দি, ব্রজবুলী, উৎকলী ইত্যাদি নানারূপ ধারণ করিয়াছে । ইহার সকলই সংস্কৃতের কথিত ভাষা এবং সকলই প্রাকৃতশব্দবাচ্য। শকুন্তলার দেশে তাহার সময়ে যেরূপ কথা বলিত, তাহী ও প্রাকৃত ; আমাদের দেশে আমাদের কালে যেরূপ কথা বলে, তাহাও প্রাকৃত ; এবং মগধদেশে এখন যেরূপ কথা বলে, তাহ, এবং সেই দেশে পুৰ্ব্বে যেরূপ কথা বলিত, তাহী, উভয়ই সংস্কৃতের কথিত ভাষা এবং উভয়ই প্রাকৃতসংজ্ঞাবাচ্য । ‘প্রাকৃত’ কোন একটি বিশেষ ভাষার নাম নহে । সমস্ত ভারতবর্ষের নানাপ্রদেশে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে কত প্রকার প্রাকৃত যে প্রচলিত ছিল, তাহার সংখ্যা নাই । সেই সকল প্রদেশের সকল কালের কথিতভাষার নামই প্রাকৃত । ইহা সংস্কৃতের কথিতভাষার সাধারণ নাম। প্রাকৃতভাষার অর্থ ংস্কৃতের কথিতভাষা, তাহ যে দেশেরই হউক বা যে কালেরই হউক। অতএব ংলা হিন্দি প্রভৃতি সকলই প্রাকৃতশব্দ বাচ্য । চন্দ্রবাবু বলিয়াছেন আমরা “মাথা খুড়িয়া মরিলেও” তিনি বাংলাকে ‘প্রাকৃত’ বলিবেন না। কিন্তু ৫০৷৬০ বৎসর পূৰ্ব্বে যে সকল বাংলা পুস্তক লিখিত হইয়াছে, তাহাতে পৰ্য্যন্ত বাংলাকে ‘প্রাকৃত’ বলা হইয়াছে। १५{l, শনির মাহাত্ম্য আছে স্কন্দ-পুরাণেতে, পরাকৃত বিনে কেহ ন পারে বুঝিতে, অতএব পয়ারপ্রবন্ধে তাহ বলি, একচিত্তে শুন সবে শনির পাচালী । পূৰ্ব্ববঙ্গে প্রচলিত শনির পাঁচালী’। বাবু দীনেশচন্দ্র সেনও তাহার বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’-নামক পুস্তকে বলিতে বাধ্য’ হইয়াছেন, “পুৰ্ব্বে ভারতের কথিতভাষামাত্রই, বোধ হয়, প্রাকৃত-সংজ্ঞায় অভিহিত হইত, এবং এই বাঙ্গলা ভাষাকেও প্রাকৃত বলিত, যথা—