পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৪৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম-সংখ্যা । ] সার সত্যের আলোচনা। 8b*లి কথা এখন যাইতে দেওয়া হো’ক্‌ ! প্রকৃত বক্তব্য যাহা, তাহা এই যে, সীমাবদ্ধ বস্তুগণের মধ্যে, যে বস্তু যে পরিমাণে আপন সীমার বাহিরের বস্তুসকলের সহিত যোগে চলিতে পারে, সে বস্তু সেই পরিমাণে যোগ্য-শব্দের যাচ্য। মোটামুটি সকলেই জানে যে, তরুলতা অপেক্ষ পশু-পক্ষী, এবং পশু-পক্ষী অপেক্ষা মনুষ্য যোগ্যতর জীব ; কিন্তু সে প্রকার জানা কাজের জানা নহে । স্ব স্ব নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে সকলেই তো যোগ্য ; তবে কেন একজনকে বলা হয় যোগ্য, আরেক জনকে বলা হয় অযোগ্য ? যে যোগ্য, সে কিসে যোগ্য —ইহার একটা ঠিক্‌ঠাকু উত্তর দিতে পার চাই ;–তা যদি তুমি ন পার, আর, তবুও যদি বল যে, “আমি জানি যে, উদ্ভিদপদার্থ অপেক্ষা অধম-জন্তু এবং অধম-জন্তু অপেক্ষা মনুষ্য যোগ্যতর জীব", তবে সেরূপ জানা বিজ্ঞানের কোনো কায্যে আসিতে পারে না । প্রকৃত কথা এই যে, উদ্ভিদপদার্থ অপেক্ষ মূঢ়জীব এবং মূঢ়জাব অপেক্ষা মনুষ্য যে কিসের গুণে অধিকতর যোগ্য তাহার একটি কস্ট-পাথর श्रा८छं; তাহা ঘষিয় দেখিলেই—ষে যোগ্য, সে কিসে যোগ্য, তাহ তৎক্ষণাৎ ধরা পড়ে। সে কসটি পাথর যে কি, তাহ বলিতেছি । সীমাবদ্ধ বস্তু মাত্রেরই যোগ্যতার অভিজ্ঞান-চিন্তু বা নিদর্শন কি—যদি জিজ্ঞাসা কর, তবে তাহার নিজত্বের সীমাবছিভূত বস্তুসকলের সহিত তাহার যোগের দৌড় কতদুর পর্য্যন্ত, তাহ একবার ভাল করিয়া শহর করিয়া দেখ। যাহার যোগের দৌড় 8 আপন শরীরের সীমা ছাড়াইয়া যত বেশীদূর যায়, সে সেই পরিমাণে অধিকতর যোগ্য। উদ্ভিদপদার্থ-সকলের যোগের দৌড় জাহাদেয় শরীরের সীমা-ঘ্যাসা পদার্থ-সকলেতেই পৰ্য্যাপ্ত ; তার সাক্ষী—তাহারা তাহাদের মূলঘ্যাস মৃত্তিক হইতে রসাকর্ষণ করে, পত্রঘ্যাস বায়ু হইতে কার্বনাদি অন্ন আহরণ করে, ইত্যাদি। পক্ষান্তরে মূঢ়জীবদিগের যোগের দৌড় চলে তাহাদের শরীরের সীমা ছাড়াইয় তাহার ও-দিকে অনেকদূর পর্য্যন্ত । তার সাক্ষী—মৌমাছিরা থাকে মৌচাকে, মধু অন্বেষণ করে সরোবরের পদ্মবনে। এ বিষয়ে, মনুষ্য এবং নিকৃষ্ট জন্তুদিগের মধ্যে প্রভেদ এই যে, আর আর জীবদিগের যোগের দৌড় যতই দূরে প্রসারিত হউক না কেন, তথাপি তাহ নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে অবরুদ্ধ ; মনুষ্যের কিন্তু তাহী নহে ; মনুষ্যের যোগের দৌড় কোনো প্রকায় প্রাচীরের অবরোধ মানে না ; মনুষ্যের যোগের দৌড় আকাশপাতাল-ব্যাপী সমগ্র সত্যে প্রধাবিত হয় ; মনুষ্য সমগ্র আত্মার সম্যক চরিতার্থত চায় ; তাহারই জন্ত “সার সত্যের আলোচনা” । সার সত্যের আলোচনা পশু-পক্ষীদিগের অধিকার-বহিভূত । এখন দেখিতে হইবে এই যে, উদ্ভিদপদার্থ-সকলের যোগের নিদান তাহাদের প্রাণ ; মূঢ়-জন্তুদিগের যোগের নিদান তfহাদের মন ; মমুষ্যের যোগের নিদান তাহার বুদ্ধি। সেই সঙ্গে আর-একটি দেখিতে হইবে এই যে, প্রাণের বিচরণ-ক্ষেত্র অব্যক্ত সত্তা ; মনের বিচরণক্ষেত্র প্রাতি