পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২০
বহুবিবাহ।

অবৈধাচরণনিবন্ধন প্রত্যবায়গ্রস্ত হইতেন না। এক্ষণে, সকলে বিবেচনা করিয়া দেখুন, “যদি অবিধি হইত তবে বেদবহির্ভূত কর্ম্ম মহর্ষিরা করিতেন না”, কবিরত্ন মহাশয়ের এই সিদ্ধান্ত সঙ্গত হইতে পারে কি না। যদি মহর্ষিরা অবৈধ কর্ম্মের অনুষ্ঠান না করিতেন, তবে “মুনিগণ যে সকল কর্ম্ম করিয়াছেন, মনুষ্যের পক্ষে তাহা করা কর্ত্তব্য নহে”, বৌধায়ন নিজে মহর্ষি হইয়া এরূপ নিষেধ করিলেন কেন; আর, মহর্ষি আপস্তন্বই বা মহৎ লোকের অবৈধ আচরণ নির্দ্দেশপূর্ব্বক, “তদ্দর্শনে তদনুবর্ত্তী হইয়া চলিলে, এককালে উৎসন্ন হয়”, এরূপ দোষকীর্ত্তন করিলেন কেন।

 কবিরত্ন মহাশয়ের দ্বিতীয় আপত্তি এই;—

 “তর্হি কিং সর্ব্বা অসবর্ণা অগ্রে দারকর্ম্মণি তুল্যং দ্বিজাতীনামপ্রশস্তা ইত্যত আহ

 কামতস্তু প্রবৃত্তানামিমাঃ স্যুঃ ক্রমশোবরাঃ।

 দ্বিজাতির সকল অসবর্ণ প্রথম বিবাহে তুল্য অপ্রশস্তা নহে কিন্তু কামতঃ অর্থাৎ ইচ্ছাক্রমে প্রথম বিবাহে প্রবৃত্ত দ্বিজাতির এই ক্রমে শ্রেষ্ঠা বৈশ্যের শূদ্রা স্ত্রী অপেক্ষা বৈশ্যা স্ত্রী শ্রেষ্ঠা। ক্ষত্রিয়ের শূদ্রা অপেক্ষা বৈশ্যা। বৈশ্য অপেক্ষা ক্ষত্রিয় শ্রেষ্ট। ব্রাহ্মণের শূদ্রা অপেক্ষা বৈশ্য। বৈশ্য অপেক্ষা ক্ষত্রিয়া ক্ষত্রিয়া অপেক্ষা ব্রহ্মণী ভার্য্যা শ্রেষ্ঠা। কামতঃ এই শব্দ প্রয়োেগ থাকাতে যে কাম্য বিবাই এমন নহে[১]

কবিরত্ন মহাশয় ধর্ম্মশাস্ত্রব্যবসায়ী নহেন; সুতরাং মনুবচনের প্রকৃত পাঠ ও প্রকৃত অর্থ অবগত নহেন। জীমূতবাহনপ্রণীত দায়ভাগ, মাধবাচার্য্যপ্রণীত পরাশরভাষ্য, মিত্রমিশ্র প্রণীত বীরমিত্রোদয়, বিশ্বেশ্বর ভট্টপ্রণীত মদনপারিজাত প্রভৃতি গ্রন্থে দৃষ্টি

  1. বহুবিবাহরাহিত্যরাহিত্যনির্ণয়, ১১ পৃষ্ঠা