বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র: একাদশ খণ্ড
জাহাজ আল আববাস দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আক্রমণের পরে বন্দরের কাজকর্ম বন্ধ রাখা হয় এবং পরিস্থিতি আয়ত্তে রাখার জন্য সৈন্য আমদানী করা হয়।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, খুলনা, চালনা ও বরিশালের উপকূল ভাগে মুক্তিবহিনীর ক্রমবর্ধমান তৎপরতার ফলে সৈন্যবাহিনীর জনৈক সিনিয়র অফিসারসহ প্রায় ৫৪ জন পাকসৈন্য নিহত হয়েছে।
পিটিআই-এর এক খবরে বলা হয়েছে যে, গত পাঁচ দিনে বাংলাদেশের পূর্ব খণ্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে মক্তিফৌজ গেরিলাদের আক্রমণে পাক সৈন্যবাহিনীর জনৈক সিনিয়র অফিসারসহ প্রায় ৫৪ জন পাক সৈন্য নিহত হয়েছে।
চারখানা স্টীমার ধ্বংস
এখানে মুক্তিবাহিনীর সদর ঘাঁটি কার্যালয়ে প্রাপ্ত সংবাদে জানা গেছে যে, গত ১৭ই আগষ্ট মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধারা নারায়নগঞ্জ নদীতে পাট, কয়লা ও পাক সৈন্যদের জন্য রেশন বোঝাই চারখানা ষ্টীমার সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছেন।
নোয়াখালী জেলায় সোনাগাজীর নিকটে সৈন্যবাহিনীর একটি জীপ মাইন দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ায় চারজন পাক সৈন্য খতম হয়েছে। অপর ৫০ জন পাক সৈন্য নিহত হয়েছে কুমিল্লা জেলার মান্দাভাগ ও শশীদলে গেরিলাদের তৎপরতার ফলে।
আর একটি অতি বিশ্বস্ত সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে যে, গত সপ্তাহে কুমিল্লা জেলার মান্দাভাগ, নওগাঁও, লক্ষীপুর, ডিওফ, রসুলপুর, নারায়ণপুর প্রভৃতি অঞ্চলে বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর গেরিলাদের আচমকা আক্রমণে বহুসংখ্যক পাক সৈন্য ও কিছু রাজাকার নিহত হয়েছে। গেরিলারা মান্দাভাগে ৬টি বাংকার ও নবনির্মিত একটি সেতুও ধ্বংস করেছেন।
ঢাকা থেকে এখানে প্রাপ্ত এক খবরে বলা হয়েছে যে, মুক্তিযোদ্ধারা গ্রেনেড নিয়ে আক্রমণ চালালে পূবালী জুট মিলের দুটি পাট গুদাম আগুন লেগে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে গেরিলারা ৭ জন সমাজবিরোধী ও সৈন্যদের দালালকে খতম করেছেন। খবরে আরও বলা হয়েছে যে, ঢাকা ও ইহার চার পাশে পাক সৈন্য শিবিরসমূহে মুক্তিবাহিনীর আচমকা হানা এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৪৯টি পাক সীমান্ত ঘাঁটি ধ্বংস
শিলং থেকে ইউএনআই জানিয়েছে, মুক্তিবাহিনী মহল থেকে আজ বলা হয়েছে যে, শ্রীহট্ট ও ময়মনসিংহ খণ্ডে তিনটি বাদে সমস্ত পাক সীমান্ত ফাঁড়ি মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা ধ্বংস করে দিয়েছে।
২৫ শে মার্চ পাক সৈন্যবাহিনীর আক্রমণ আরম্ভের পূর্বে আসাম ও মেঘালয়ের সঙ্গে সীমন্তবর্তী এই দুটি জেলায় মোট ৫২টি পাক সীমান্ত ফাঁড়ি ছিল। এখন যে তিনটি ফাঁড়ি পাক দখলে আছে সেগুলো শ্রীহট্ট জেলায় অবস্থিত।
দোতলা ষ্টীমার ডুবিয়ে দেয়া হলো
শিলং থেকে ইউএনআইয়ের খবরে প্রকাশ, এ মাসের প্রথম দিকে মুক্তিফৌজের গেরিলারা শ্রীহট্ট মুক্তিফৌজ সেটি থেকে গোলাগুলী নামিয়ে নেয়।
খুলনার যে কোন স্থানে মুক্তিফৌজ আঘাত হানিতে সক্ষম
খুলনায় মুক্তিফৌজের তৎপরতা বিপুলভাবে বৃদ্ধি পাইয়াছে। কোন জায়গাই যে মুক্তিফৌজের দুঃসাহসী গেরিলাদের অগম্য নয় উহার প্রকৃষ্ট প্রমাণ খুলনা শহরে সদর ডাক বাংলোতে তথাকথিত শান্তি কমিটির