বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



747

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র: একাদশ খণ্ড

 আমাদের পাওয়া সংবাদে আরও প্রকাশ কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মনবাড়িয়া শহর খুব সহসাই হানাদার কবলমুক্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পাক বহিনী এখন চতুর্দিক হতে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন স্থানে আক্রমণের সম্মুখীন হতে চলেছ।

 অপর এক সংবাদে প্রকাশ কুমিল্লা জেলার লক্ষীপুর এলাকাতেও হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে প্রচণ্ড মার খেয়ে পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছে। {{right|-সাপ্তাহিক বাংলাদেশ, ২২ নভেম্বর, ১৯৭১

রণাঙ্গন সংবাদ

 কুড়িগ্রাম, ২১ শে নভেম্বর: আমাদের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি পরিবেশিত সংবাদে প্রকাশ মুক্তি সেনাদের প্রবল চাপের মুখে ভুরুঙ্গামারীতে পাক সেনারা তাদের অবস্থান ধরে রাখতে অসমর্থ হয় এবং বিপুল ক্ষয়ক্ষতির পর তারা নাগেশ্বরীতে হটে আসে। আমাদের মুক্তিবাহিনীর বীর জোয়ানগণ নাগেশ্বরী শক্র অবস্থানগুলিতে সাঁড়াশী অভিযান পরিচালনা করে এবং বহুসংখ্যককে আহত করে।

 এই অঞ্চলের পাক সেনারা এত ভীত হয়ে পড়েছে যে তারা স্বাভাবিক নিয়মে ঈদের নামাজ পড়তেও ভীত। কাজেই কুড়িগ্রামে অবস্থানরত পাক সেনারা জনসাধারণের জামাতের পূর্বেই পাহারা মোতায়েন করে নিজেরা ঈদের নামাজ সমাধা করবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তাদের এই সিদ্ধান্ত কুড়িগ্রাম মহকুমার শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আঃ হাফেজ মাইকের সাহায্যে প্রচার করে।

পাক সেনার ট্যাংক ব্যবহার

 গত ২১ শে নভেম্বর যশোহর, চিটাগাং ও সিলেট রণাঙ্গনে মুক্তিফৌজ ও পাক সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ সম্মুখযুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং এই যুদ্ধে পাক সেনারা ট্যাঙ্ক ব্যবহার করে। কিন্তু মুক্তিবাহিনীর বেপরোয়া আক্রমণের মুখে তারা টিকতে না পেরে পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হয়। মুক্তিবাহিনীর দাবী অনুসারে এই সব রণাঙ্গন থেকে তাঁরা পাঁচটি ট্যাঙ্ক দখল করে নেয়। এর মধ্যে দুইটি একদম অকেজো হয়ে যায় এবং তিনটিকে আস্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পাক সাঁজোয়া বাহিনীর এই বিপর্য্যয়ের ফলে পাক সামরিক জান্তার মনে শেষ বিজয়ের আশার প্রদীপের শিখাটিও যেন আস্তে আস্তে ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে আসছে। {{right|-অগ্রদূত, ২৪ নভেম্বর, ১৯৭১

* * * * *

যশোর, কিশোরগঞ্জ, মেহেরপুর, শ্রীহট্ট অবরুদ্ধ। মুন্সীগঞ্জ মুক্ত। চট্টগ্রামে বোমাবর্ষণ

 মুজিবনগর, ২৪ নভেম্বর- যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর- বাংলাদেশের এই চার জেলার ৮০ ভাগ এলাকাই আজ মুক্তিবাহিনীর দখলে এসেছে। মুক্তিবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ কিশোরগঞ্জ, শ্রীহট্ট ও যশোর শহরে ‘শক্রসেনাদের' ঘিরে ফেলেছে। যশোর ক্যাণ্টনমেণ্টের জন্য প্রচণ্ড লড়াই হচ্ছে। উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ দিক থেকে মুক্তিবাহিনী যশোর শহরকে ঘিরে ফেলেছে। কুষ্টিয়া জেলার গুরুত্বপূর্ণ মেহেরপুর শহরটির চারিদিকে এখন মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা হটে যাবার মুখে পাক সৈন্যরা গোলাবর্ষণ করছে। ঢাকা থেকে সর্বশেষ যা খবর এসেছে, তা হল, সামরিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ মুন্সীগঞ্জ শহর ও সন্নিহিত এলাকা এখন মুক্ত।