পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৯৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

955 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড ঢাকার পাক বাহিনীর কত সেনা আছে? সে হিসাবও কেউই জানেন না। জেনারেল অরোরা এইদিনও বলেন, গোটা বাংলাদেশে ওদের চারটা ডিভিশন ছিল। এবং আমাদের সামরিক বাহিনী আগে বলেছিলেন, ঢাকায় রয়েছে একটা ডিভিশন। যদি তাই হয় এবং যশোর সিলেট ও কুমিল্লা অঞ্চল থেকে কিছু পাকসৈন্য গিয়ে সত্যিই ঢাকায় আশ্রয় নিয়ে থাকে তাহলে ঢাকায় অন্তত দেড় ডিভিশন সৈন্য রয়েছে। কিন্তু সত্যিই কি ওদের অত সৈন্য ঢাকায় আছে? ঢাকার লড়াই শেষ হলেই তা জানা যাবে-তার আগে নয়। ঢাকায় ওদের দূরপাল্লার ভারী কামানই বা কত রয়েছে? বাংলাদেশে এখন পাক বিমান বাহিনীর কোনও অস্তিত্ব নেই। তাই ঢাকার লড়াইয়ে ওদের মূলত নির্ভর করতে হবে দুরপাল্লার ভারী কামানের উপর। গোটা বাংলা যুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোথাও পাক বাহিনী ভারী দূরপাল্লার কামান ফেলে যায়নি। যদি ওরা আগেভাগেই ভারী দূরপাল্লার কামানগুলি পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য সরিয়ে না নিয়ে গিয়ে থাকে তাহলে ঢাকার চূড়ান্ত লড়াইয়ে সে সব কামান দেখা যাবেই। হিলির যুদ্ধে নভেম্বর মাসেই ওরা ৩৫ মাইল পাল্লার কামান ব্যবহার করেছিল। ৩৫ মাইল পাল্লার দু’চারটি কামান শুধু সীমান্তের লড়াইয়ে ব্যবহার করে ওরা ভারতীয় বাহিনীকে ধাপ্পা দিতে চেয়েছিল, না সত্যিই ওই ধরনের কামান ওরা ংলাদেশে আরও অনেক রেখেছিল ঢাকার লড়াইয়ে তাও বোঝা যাবে। ঢাকা থেকে ইউ পিআই এক খবরে জানিয়েছেন, আজ ভারতীয় সৈন্যরা অগ্রসর হওয়ায় পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের অগ্রবর্তী ঘাঁটিগুলি থেকে নগরীর মধ্যে পশ্চাদপসরণ করেছে। ভারতীয় সৈন্যরা অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গোলার আওয়াজও শোনা যাচ্ছে। আমাদের লন্ডন অফিসের খবরে বলা হয়েছে, ঢাকা থেকে সেখানে টেলিফোনে প্রাপ্ত সংবাদে জানা গিয়েছে, অগ্রসরমান ভারতীয় বাহিনীর গোলার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। অবস্থা খুবই সংকটজনক। ঢাকা শহর প্রায় বিচ্ছিন হয়ে পড়েছে।