পাতা:বাঙ্গ্‌লার বেগম - ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মণিবেগম

 নিজামুদ্দৌলার মৃত্যুর পর তদীয় ষোড়শবর্ষীয় সহোদর সৈয়ফুদ্দৌলা ১৭৬৬ খৃঃ অব্দের ২২শে মে তারিখে বাঙ্গালার মসনদে অধিরূঢ় হন। তাঁহার সময়ে মাতা মণিগেমের হস্তে সমস্ত কর্ত্তৃত্বের ভার অর্পিত হয়। সৈয়ফুদ্দৌলা নাবালক বলিয়া মণিবেগম অভিভাবক-স্বরূপে রাজকার্য্য নির্ব্বাহ করিতেন। ১৭৭০ খৃষ্টাব্দের প্রারম্ভে মন্বন্তরের বর্ষে বসন্তরোগে সৈয়ফুদ্দৌলার মৃত্যু হয়।

 সৈয়ফুদ্দৌলার মৃত্যুর পর মীরজাফরের অন্যতমা ভার্য্যা বব্বু বেগমের দ্বাদশবর্ষীয় পুত্র মোবারক-উদ্দৌলা নবাব হন। পূর্ব্বের ন্যায় মহম্মদ রেজা খাঁই নায়েব রহিলেন। ১৭৭২ খৃঃ অব্দের প্রারম্ভে ওয়ারেন হেষ্টিংশ বাঙ্গালার গভর্ণর হইয়া আসিলেন। ইতিমধ্যে বাঙ্গালা হইতে আশানুরূপ অর্থাগম হওয়ায়, নব ব্যবস্থার আয়োজন হইতে লাগিল। ইংরাজের ক্ষতিপূরণ, মনরোর প্রাপ্য ও সেনাদলের প্রতিশ্রুত টাকা প্রভৃতি নাবালক নবাবের নিকট হইতে কি ভাবে আদায় করিতে পারা যায়, তাহার পরামর্শ চলিতে লাগিল।[১] রাজকোষ হইতে অর্থাগমের সুবিধা হইতেছে না দেখিয়া নবাবের কর্ম্মচারীদিগের কার্য্যকলাপ পরিদর্শনের জন্য একটী গুপ্ত কমিটীর সৃষ্টি হইল। নন্দ কুমারের প্ররোচনায় ও সাক্ষ্যে, কমিটী নায়েব রেজা খাঁকে সকল অনর্থের মূল সাব্যস্ত করিলেও, তাঁহার নিকট হইতে সন্তোষজনক হিসাব নিকাশ লইবার জন্য পূর্ব্বাহ্ণে তাহাকে গোপনে কারাবদ্ধ করিয়া রাখিতে রেসিডেণ্ট মিড্‌ল্‌টন্ সাহেবকে পত্র লিখিলেন। ইহার কিছুদিন পরে রেসিডেণ্ট রেজা খাঁকে বন্দী করিয়া কলিকাতায় আনয়ন করেন। মণিবেগম রেজা খাঁর ঈদৃশ অবমাননায় অত্যন্ত ব্যথিত

৩৯


  1. Courts General Letter 15th April, 1771 and Consultations thereupon. Nizamat Records, Paper Book No. 3.