পাতা:বাঙ্গ্‌লার বেগম - ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঙ্গ্‌লার বেগম

সৈয়দ অহম্মদের পুত্র পূর্ণিয়ার শাসনকর্ত্তা সওকৎজঙ্গ। আলিবর্দদী খাঁ এই দুইজনকে স্ববশে আনিবার জন্য, তাঁহার বক্সী মীরজাফর আলি খাঁ ও দেওয়ান রায় দুর্ল্লভকে হস্তগত করিয়াছিলেন। রায়দুর্ল্লভকে তিনি উপঢৌকন দ্বারা এবং মীরজাফরকে কোরাণ সরিফ স্পর্শ করাইয়া শপথপূর্ব্বক সিরাজের পক্ষাবলম্বন করাইয়াছিলেন। ঘসিটির সহিত সিরাজের যাহাতে কোন সংঘর্ষ না ঘটে, তজ্জন্য আলিবর্দ্দী খাঁ বিশেষরূপ চেষ্টা করিয়াছিলেন। এই সময় ৮২ বৎসর বয়ঃক্রমকালে উদরীরােগে নবাবের মৃত্যু হয়।

 নবাবের মৃত্যুর অনতিকাল পূর্ব্ব হইতেই বাঙ্গালার শাসনভার সিরাজের হস্তে ন্যস্ত হইয়াছিল। নওয়াজিস মহম্মদের সহিত বহুদিবসের মনােমালিন্য ও শত্রুতার প্রতিশোধ গ্রহণার্থ, সিরাজ তাঁহার বিধবাপল্লী ঘসিটি বেগমের সহিত বিবাদ বাধাইবার সূত্র অনুসন্ধান করিতেছিলেন। তাঁহার যাবতীয় ধন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করাই সিরাজের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল। ছিদ্রান্বেষীর ছিদ্রের অভাবও হইল না। তিনি শীঘ্রই জানিতে পারিলেন যে, মীরনাজির গালি নামক একজন রাজকর্ম্মচারী বেগম সাহেবার বিশেষ শুভাকাঙ্ক্ষী ও প্রিয়পাত্র। তিনি মনে মনে স্থির করিলেন, এই নাজির আলিকে উপলক্ষ করিয়াই ঘসিটির সহিত বিবাদ ঘটাইতে হইবে। এক্ষণে এই নাজির আলির বিরুদ্ধে কোন গুরুতর অভিযােগ আনয়ন পূর্ব্বক তাহার শাস্তির নিমিত্ত বেগম-সাহেবার নিকট অনুরােধ করিয়া পাঠাইতে পারিলে হয় ত তিনি কৃতকার্য্য হইতে পারেন। এই নাজির আলির পক্ষে অশুভকর কোন প্রস্তাব উত্থাপিত করিলে, ঘসিটি কিছুতেই তাহাতে সম্মত হইবেন না, তখন সেই সূত্রে তিনি তাঁহার মনােগত বৈরিতা প্রকাশ্যভাবে চরিতার্থ করিবার সুযােগ

৫০