পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

፩ ማ বামুনের মেয়ে অন্ধকার স্থান হইতে ঘড়িতে এগারোটা বাজিয়া তাহার শাবার সময়টা নির্দেশ করিয়া দেওয়া সত্ত্বেও আজ তাহার নড়িবার ইচ্ছাই হইল না, যেমন ছিল তেমনি নিঃশব্দে স্থির হইয়া বসিয়া বহিল । হঠাৎ তাহার কানে সদর-দরজায় করাঘাতের আওয়াজ এবং পরক্ষণে তাহ খোলার শব্দও শুনিতে পাইল। একবার ইচ্ছা করিল ডাকিয়া হেতু জিজ্ঞাসা করে, কারণ পল্লীগ্রামে এত রাতে সহজে কেত কাহারও বাটতে যায় না, কিন্তু উদ্যমের অভাবে প্রশ্ন কব হইল না। কিন্তু অধিকক্ষণ ভাবিতে হইল না। মুহূৰ্ত্ত-কয়েক পরেই দ্বারপ্রান্তে নূতন রেশমের শাড়ীর প্রবল খস্ খস শব্দের সঙ্গে সঙ্গেই কে একজন ঝাড়র মত ঘরে ঢুকিয় তাহার পায়ের কাছে উপুড় হইয়া পড়িল । তরুণ শশব্যস্তে উঠিয়া দাড়াইয়া দেখিল জ্যোৎস্নাব আলোকে ইহার পরিধানের রাঙা চেলি চক্‌চক্‌ করিতেছে । এ যে .ক, তাহা চক্ষর নিমিষে উপলব্ধি করিয়া ভয়ে বিস্ময়ে তাঙ্গার সমস্ত ব্লকের 'ভতরটা সেই মুহূৰ্বেই একেবারে শুকাইয়া উঠিল । সে যে কি বলিবে, কি করিবে কিছুই ভাবিয়া পাইল না। কিন্তু তাহারও সময় রহিল ন। একটা ভয়ানক মৰ্ম্মান্তিক চাপ৷ কান্নায় অকস্মাৎ ঘরের বাতাস, ঘরের আধার, ঘরের স্নান আলোক, ঘরের যাহা কিছু সমস্ত একসঙ্গে একমুহূৰ্ত্তে যেন চিরিয়া খান খান হইয়া গেল । মিনিট-দুই-তিন হতবুদ্ধির ন্যায় নি:শব্দে থাকিয়া অরুণ একটুখানি সরিয়া দাড়াইয়া জিজ্ঞাসা করিল, ব্যাপার কি সন্ধ্যা - সন্ধা মুখ তুলিয়া চাহিল। তাহার পরিধানের রাঙা চলির সঙ্গে সৰ্ব্বাঙ্গের অলঙ্কার জ্যোৎস্নায় জ্বলিতে লাগিল, সুন্দর ললাটে চন্দ্ররশ্মি পড়িয়া চন্দনের পত্ৰলেখা দীপ্ত হইয়া উঠিল এবং তাঙ্গারই ঈষৎ