পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শ্বশুরের পরিচয়।
৮১

পরে তিনি বাবুলেন —“ঘোষ! তুই কতক্ষণ থাকৃবি? তোকে না মারিয়া আমি যাইতেছি না।” ঘোষ গাছের উপর বসিয়া থর থর কাঁপিতে লাগিল। সে কোনমতে গাছ হইতে নামিল না। ঘোষ গাছ হইতে কিছুতেই নামিতেছে না দেখিয়া ভট্টাচার্য্য বলিলেন,—“নামিয়া আয়; আমার পা ছুঁইয়া দিব্যি কর যে, আর এ কাজ করবি না; তা হ'লে এ যাত্র তোকে ক্ষমা করিব।”

 ঘোষ বলিল,—“তুমি পৈতা ছুইয়া দিব্যি কর, আমি নামিয়া গেলে আমাকে মারবে না, তা হলে আমি নামবো।”

 ভট্টাচার্য হাসিয়া কহিলেন,—“আমি পৈতা ছুঁইয়া দিব্য করিলে তোর বিশ্বাস হইবে কেন?”

 ঘোষ বলিল,—“আমি তোমার পা ছুঁইয়া দিব্যি করলে তুমি বিশ্বাস করবে; আর তুমি ব্রাহ্মণ, পৈত ছুঁইয়া দিব্যি করলে আমি বিশ্বাস করব না?”

 ভট্টাচার্য্য পৈতা ছুঁইয়া দিব্য করিলেন। ঘোষ নামিয়া আসিয়া ভট্টাচার্য্যের পা ছুঁইয়া দিব্য করিল, ভট্টাচার্য্য ক্ষমা করিলেন। ঘোষ চলিয়া গেল। পরে ভট্টাচার্য্য সেই আহত খোট্টাটিকে সঙ্গে লইয়া বাড়ী ফিরিয়া যান। তিনি খোট্টাটিকে যথাযোগ্য আহারাদি করাইয়া বিদায় দেন।

 ভট্টাচার্য্যের প্রতাপে সেই সময় অনেক দস্যু-লেঠাল জব্দ হইয়াছিল।

 একবার তাঁহার পৃষ্ঠব্রণ হয়। ডাক্তার অস্ত্র করিবার পূর্ব্বে “ক্লোরোফরম্” করিয়া তাঁহাকে অজ্ঞান করিবার উপক্রম করেন। তিনি বলিলেন,—“অজ্ঞান করবে কেন? অস্ত্র কর, অমি অজ্ঞান হইয়া আছি।” ডাক্তার ছুরি বসাইলেন, ছুরি ভাঙ্গিয়া গেল। তাঁহার

১১