পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
বীডয়াশাগোড়।

লোক গিয়াছিল। বাড়ীতে পৌছিলে সকলে ভট্টাচার্যকে কলাই লইতে অনুরোধ করে। ভট্টাচার্য্য বলেন —“আমি কলাই কি করিব? কোথায় রাখিব? তোমরা উপযুক্তরূপ চাউল তরি-তরকারী প্রভৃতি লইয়া এস; এই কলায়ে দাইল হউক; রাঁধিয়া বাড়িয়া সবাই আনন্দে আহার করিব।” তাহাই হইল।

  এক সময় ভট্টাচার্য্যের গ্রামস্থ ভুবন ঘোষ নামক এক সদেগাপ নিকটবর্ত্তী একটী পালের নিকট বেণাবনের ভিতর লোক ঠেঙ্গাইয়া মারিত। ঘোষ খুব বলবান ছিল। গ্রামের লোক তাহার জন্য সদা শঙ্কিত থাকিত। এক দিন ভট্টাচার্যের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বলেন—“শতু! তুই থাকিতে ঘোষ জব্দ হয় না।” শক্রঘ্ন বলিলেন,—“তাহার আর কি, এত দিনতো বল নাই।” শক্রঘ্ন ঘোষকে জব্দ করিতে প্রতিশ্রুত হইলেন। -

 শক্রয় এক দিন প্রাতঃকালে চুপি চুপি গিয়া বেণাবনে লুকাইয়া থাকেন। কিয়ৎক্ষণ থাকিয়া তিনি দেখিলেন, সমস্ত বন আন্দোলিত হইতেছে। তিনি বুঝিলেন, ঘোষ কাহাকে ধরিয়াছে। বাস্তবিক ঘোষ সে দিন এক জন পশ্চিমে খোট্টকে ধরিয়াছিল। খোট্টাটা খুব বলবান ছিল, ঘোষ তাঁহাকে সহজে পাড়িতে পারে নাই। দুই জনে ধস্তাধস্তি হইতেছিল। ভট্টাচার্য্য এই সময় তাহাদের সন্মুখে উপস্থিত হন। তাঁহাকে দেখিয়া ঘোষ ভায়া শিকার ছাড়িয়া সম্মুখে একটা শিমূল গাছে উঠিয়া পড়ে। এই সময় খোট্টাটা অজ্ঞান হইয় পড়িয়াছিল। ভট্টাচার্য্য তাঁহাড় মুখে জল দিয়া তাহার চৈতণয় সম্পাদন করেন। পরে তিনি শিমূল বৃক্ষের তলায় গিয়া তাহার উপর উঠিতে চেষ্টা করেন। স্থূলকায় হেতু উঠতে না পারিয়া তিনি সিমূলতলে দাঁড়াইয়া রহিলেন।