পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
বিদ্যাসাগর।

হইবে। .তিনি সকল কার্য্যে সকল সময়ে স্বাধিকারভূত ও স্বকীয় বিদ্যা বুদ্ধিসম্মতা শক্তির আমূল সঞ্চালন ও পূর্ণ প্রয়োগ করিতেন। এক কথায় বলি, এমন এক-টানা খর স্রোত ইহ সংসারে মনুষ্যজীবনে বড়ই দুর্ল্ভ! এইবার তার পূর্ণ পরিচয়। করুণার পরিচয় অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে পাইবেন। কর্ম্মীর কার্য্যাভাবে যে কখন কর্ম্মাবস্থার হয় না, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জীবন তাহার প্রমাণ। তাহা সর্ব্ব সময়ে সকলের অনুকরণীয় এবং শিক্ষণীয়। কর্ম্মীর কার্য্যাভাব যে কখন থাকে না, বিদ্যাসাগরের কর্ম্মাবস্থার প্রথম হইতে তাহার প্রমাণ। বিখ্যাত ইংরেজি গ্রন্থকার সিডন্‌ স্মিথ বলিয়াছেন,—

 “সকলে যেন কার্য্যে নিযুক্ত থাকেন। যাহার যেরূপ প্রকৃতি, তিনি যেন তদনুসারে উচ্চ কার্য্যে নিযুক্ত হন। আপন কার্য্য যথাসাধ্য সাধন করিয়াছেন, এইটী বুঝিয়াই যেন তিনি মরিতে পারেন।”[১]

 বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কার্য্যারম্ভ ১২৪৮ সালের অগ্রহায়ণ বা ১৮৪১ খৃষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে। এখানে কার্য্য অর্থে চাকুরী বুঝিতে হইবে। কার্য্যের অবশ্য সুবিশাল অর্থ—মনুষ্যজীবনের করণীয় মাত্র। বিদ্যাসাগর মহাশয়, যখন সংস্কৃত কলেজের পাঠ সমাপন করেন, তখন ফোর্ট উইলিয়ম্‌ কলেজের প্রধান পণ্ডিতের পদ শূন্য হয়।[২] বিদ্যাসাগর মহাশয় তখন

  1. “Let every man be occupied, and occupied in the highest employment of which his nature is capable, and die with the consciousness that he has done his best.”
  2. এই কলেজ ১৮০০ খৃষ্টাব্দে (১২০৭) সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।