পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৬
বিদ্যাসাগর।

কার্য্যে বাধা দেয়; বিদ্যাসাগর কোন বাধা মানেন নাই। বাহ্য জগতে উভয়ের অবস্থা এইরূপ; অন্তর্জগতের ক্রিয়া নিশ্চিতই ভিন্নরূপ। এক জনের বিঞ্জয়বাসনা; অপরের মাতৃপূজা। বল দেখি, পাঠক! কাহার সাহস প্রশংসনীয়? এ জগতে কোন্ বীর স্মরণীয়? বিদ্যাসাগরের মাতৃভক্তির এই একটা মাত্র দৃষ্টান্ত পাইলেন; পরে আরও বহু প্রকার পাইবেন।

 বিদ্যাসাগর মহাশয়, বাল্য-রচনায় যেমন সুন্দর সুপাঠ্য কবিতা রচনা করিতে পারিতেন, যৌবনেও তাঁহার সেইরূপ কবিতা রচনা করিবাৰ শক্তি ছিল। তিনি যখন ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজের পণ্ডিত, তখন কষ্ট-নামে এক সিবিলিয়ন সাহেব তাঁহাকে নিজের নামে একটী কবিতা রচনা করিতে অনুরোধ করেন। অনুরোধের বশে নিম্নলিখিত কবিতাটা রচিত হইযাছিল,—

“শ্রীমান্ রবর্টকষ্টোহদ্য বিদ্যালয়মুপাগতঃ।
সৌজন্যপূর্ণৈরালাপৈর্নিতিরাং মামতোষয়ৎ॥
সহিষ্পদ গুণসম্পন্নঃ সদাচাররতঃ সদা।
প্রসন্নবদনো নিত্যং জীবত্বব্দশতং সুখী॥”

 কষ্ট সাহেব সন্তুষ্ট হইয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়কে ২০০৲ দুই শত টাকা পুরস্কার দিতে প্রস্তুত হন। তিনি তাহা গ্রহণ না করিয়া কলেজে জমা দিতে বলেন। সাহেব তাহাই করেন। যে ছাত্র সংস্কৃত রচনায় প্রথম হইতেন, তিনি এই টাকা হইতে ৫০৲ পঞ্চাশ টাকা পুরস্কার পাইতেন। ৪ চারি বৎসর ৪ চারিটী ছাত্র এই পুরস্কার পাইয়াছিলেন। ইহার নাম হইয়াছিল, “কষ্ট-পুরস্কার”। বিদ্যাসাগর মহাশয নিজে টাকা না লইয়া সংস্কৃত চর্চ্চার শুভোদ্দেশে ৪ চারিটী স্বদেশীয় পণ্ডিতাকে প্রকারান্তরে এই টাকা দেওয়াই-