পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্য-সন্ধান।
১৭১

হীনতর, তাহার আর সন্দেহ কি? ইংরেজী গদ্য-সাহিত্যের যে রূপ শনৈ: শনৈঃ ক্রম-পুষ্টিসাধন হইয়াছে, বাঙ্গালার সেরূপ হয় নাই। চতুর্দ্দশ শতাব্দী হইতে উনবিংশ শতাব্দী পর্য্যন্ত যে সব ইংরেজী গ্রন্থকার আবির্ভূত হইয়াছেন, তাঁহাদিগের গ্রন্থাদির সমালোচনা করিলে, ইংরেজী গদ্য সাহিত্যের পুষ্ট-প্রক্রিয়া, অতীব বিস্ময়াবহ ব্যাপারের মধ্যে পরিগণিত হয়। ইংরেজের বাণিজ্য বিস্তীর ও রাজ্য প্রসার ইংরেজী গদ্য-সাহিত্যের পুষ্টি-প্রসারে অবশ্য প্রধান সহায়। ইংরেজী প্রসারের অন্ততম একটা বিশিষ্ট কারণ লক্ষিত হয়; ইংরেজী গদ্য সাহিত্যে একটা সুআদর্শ পাইয়াছিল। ফরাসীর পরিপুষ্ট গদ্য-সাহিত্য, ইংরেজী গদ্য-সাহিত্যের প্রকৃষ্ট আদর্শ। বাঙ্গালীর পরাধীনতা ও দরিদ্রতা সাহিত্যপুষ্টির প্রবল অন্তরায়। ইংরেজী শিক্ষার প্রাধান্যহেতু বাঙ্গালা পাঠের প্রবৃত্তিহ্রাস এবং প্রকৃত আদর্শের অসদ্ভাব বাঙ্গলা-সাহিত্যের উন্নতিপক্ষে অন্যতম অনাহত প্রতিবন্ধক। অধুনা ইংরেজী কতকটা আদর্শ বটে; কিন্তু তদ্দ্বারা বাঙ্গালা-সাহিত্য বিসদৃশ বিজাতীয় ভাবাপন্ন হইয়া পড়িতেছে। এই জন্য বাঙ্গালা সাহিত্যের সর্ব্বাঙ্গীন শ্রীবৃদ্ধি সুদূরপরাহত বলিয়া মনে হয়। তবে ইহা অনেকটা পুষ্টির দিকেই অগ্রসর হইতেছে।

 “বাসুদেব চরিত” রচিত হইবার পূর্ব্বে বঙ্গালা-ভাযার পুষ্টিসাধক যে সব পুস্তক প্রচারিত হইয়াছিল, তাহদের প্রত্যেকের আলোচনা করিয়া, ভাষার বিজ্ঞান-সন্মত ক্রমোন্নতির প্রমাণ প্রদর্শন করা এখানে একরূপ অসম্ভব। যাহারা পুষ্টি-ক্রমের একটা সোজা পরিচয় লইতে চাহেন, তাঁহারা পাদরী ইয়াটস্ সাহেব প্রণীত “বঙ্গভাষার উপক্রমণিকা”(“Introduction to the Bengali Language.”) নামক গ্রন্থের দুই খণ্ড পুস্তক