পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সহিত্য-সন্ধান।
১৭৩

গ্রাম্যবাক্য প্রয়োগে অনেক স্থান শ্রুতিকটু হইয়াছে। তবে শব্দপ্রয়োগ সরল ও সহজ। একটু নমুনা দিলাম, -

 “পূর্ব্বকালে ধনবানদের মধ্যে আমদ-মুলতান নামে একজন ছিলেন; তাহার প্রচুর ধন ও ঐশ্বর্য্য এবং বিস্তর সৈন্য-সামন্ত ছিল; একসহস্ৰ অশ্ব পঞ্চশত হস্তী নবশত উষ্ট্র ভারের সহিত তাঁহার দ্বারে হাজির থাকিত। কিন্তু তাঁহার সস্তানসস্তুতি ছিল না। এই কারণ তিনি দিবারাত্রি ও প্রাতে ও সন্ধ্যাতে ঈশ্বরপূজকদের নিকট গমন করিয়া সেবার দ্বারা সন্তানের প্রার্থনা করিতেন। কতক দিবস পরে ভগবান্ স্থষ্টিকর্ত্তা সূর্য্যের ন্যায় বদনচন্দ্রের ন্যায় কপাল অতি সুন্দর এক পুত্র তাহাকে দিলেন। আমদ সুলতান ঐ সন্তান পাইয়া বড় প্রফুল্লিতচিত্ত পুষ্পবৎ বিকসিত হইয়া সেই নগরস্থ প্রধান লোক আর মন্ত্রী ও পণ্ডিত এবং শিক্ষাগুরু আর ফকিরদিগকে আহবানপুর্ব্বক আনয়ন করিয়া বহুমূল্য খেলাৎ বস্ত্রাদি দিলেন। যখন সেই বালকের সপ্তম বৎসর বয়ঃক্রম হইল, তখন আমদ সুলতান একজন বিদ্বান লোকের স্থানে পড়িবার জন্তে সেই পুত্রকে সমর্পণ করিলেন। কতক দিবসেতে সেই বালক আরবী ও পারসী শাস্ত্রের সমুদয় পুস্তক পড়িয়া সমাপ্ত করিয়া রাজসভার ধারামতে কথোপথন আর বসন উঠন শিক্ষা করিলেন। তার পর রাজার আর সভাস্থ লোকদের পসন্দেতে উৎকৃষ্ট হইলেন।”

 “তোতা ইতিহাস” কাহার লিখিত, তাহা জানিতে পারা যায় নাই; তবে যে ইহা এদেশীয় লোকের লিখিত, ইয়াটস্ সাহেব তাহার স্পষ্ট পরিচয় দিয়াছেন। এদেশীয়ের লিখিত হইলেণ্ড ইহার বাঙ্গালা কতকটা পাদরীদের বাঙ্গালার মত।