পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪৮
বিদ্যাসাগর।

বীটন বিদ্যালয়ের সেক্রেটরী-পদ পদিত্যাগ করিবার পরও বিদ্যালয়ের উপর তাঁহার যথেষ্ট স্নেহ ও মমতা ছিল। শুনিতে পাওয়া যায়, বীটন্ বিদ্যালয়ের শিক্ষা-প্রণালীর পরিচালন-প্রথা তাদৃশ মনোমত না হওয়ায়, তিনি ইহার প্রতি শেষে বীতশ্রদ্ধ হইয়াছিলেন।

 ১৮৫১ সালের ৬ই এপ্রেল বা ১২৫৭ সালের ২৫শে চৈত্র বিদ্যাসাগর মহাশয় চেম্বর সাহেবের “Rudiments of knowledge” নামক গ্রন্থের অনুবাদ প্রচার করেন। ইহার নাম বোধোদয়। বীটন্ বিদ্যালয়ের পাঠ্য জন্য এই পুস্তক সঙ্কলিত হইয়াছিল। ইহার পূর্ব্বে পণ্ডিত মদনমোহন তর্কলঙ্কার প্রণীত শিশুশিক্ষা প্রথম ভাগ, দ্বিতীয় ভাগ ও তৃতীয় ভাগ প্রচলিত হইয়াছিল। এই জন্য বোধ হয় বোধদয়ের প্রথম নাম হইয়াছিল, শিশুশিক্ষা চতুর্থ ভাগ।[১]

 বোধোদয় হিন্দু-সন্তানের সম্যক্ পাঠোপযোগী নহে। বোধোদয়ে বুদ্ধির অনেক স্থলে বিকৃতি ঘটিবারই সম্ভাবনা। “পদার্থ তিন প্রকার,—চেতন, অচেতন ও উদ্ভিদ”; আর “ঈশ্বর নিরাকার চৈতন্তস্বরূপ” ইহা বালক ত বালক, কয়জন বিজ্ঞতম বৃদ্ধের বোধগম্য হয় বল দেখি?”[২]

 গ্রন্থকার বিজ্ঞাপনে লিথিয়াছেন,—“সুকুমারমতি বালক বালিকারা অনায়াসে বুঝিতে পারিবেক, এই আশয়ে অতি সরল ভাষায় লিখিবার নিমিত্ত সবিশেষ যত্ন করিয়াছি। কতদূর কৃত-

  1. নব্য ভারত ১২৯৯ সাল, ফাল্গুন মাস, ৫৬৭ পৃষ্টা
  2. অধুনা নারায়ণ বাবু বোধোদয়ের কতক সংস্কার করিয়াছেন।