পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫৪
বিদ্যাসাগর।

হউক,তদন্তে ডাকাইতির কোন কিনারা হয় নাই। গ্রীষ্মাবকাশের অবসানে বিস্তাসাগর মহাশয় কলিকাতায় ফিরিয়া আসেন। এইখানে ৰলিয়া রাখি, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের উদ্যোগে ও চেষ্টায় বাঙ্গালার স্কুলসমূহে গ্রীষ্মাবকাশ প্রবর্তিত হয়।

 কলিকাতায় ফিরিয়া আসিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় তদানীন্তন ছোট লাট হেলিডে সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ করেন। ছোট লাট ৰাহাদুর তাঁহার মুখে ডাকাইতির কথা শুনিয়া বলিয়াছিলেন,— “তুমি তো বড় কাপুরুষ, বাড়ীতে ডাকাইতি পড়িল, আর তুমি প্রাণ লইয়া পলায়ন করিলে?” তদুত্তরে বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিয়াছিলেন,—“এখন আমার প্রতি কাপুরুষতার অভিযোগ আরোপ করিতে পারেন, কিন্তু এই দুর্ব্বল বাঙ্গালী যুবক যদি একাকী সেই ৩০।৪০ জন সবল ডাকাইতের সহিত যুদ্ধ করিত, তাহা হইলে নিশ্চিতই তাহাকে প্রাণ বিসর্জন করিতে হইত। তখন বিদ্যাসাগরের নির্ব্বুদ্ধিতার কলঙ্ক জগতময় রাষ্ট্র হইত। আপনি হয় তো সর্ব্বাগ্রে তাহার রটনা করিতেন। যখন প্রাণ লইয়া, আপনার সম্মুখে উপস্থিত হইতে পারিয়াছি, তখন লুষ্ঠিত সর্ব্বস্বের জন্য আর ভাবনা কি বলুন!”

 বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাড়ীতে হঠাৎ ডাকাইতি হইল কেন, এ প্রশ্ন স্বতই উখিত হইতে পারে। বাস্তবিকই কি তিনি তখন তাদৃশ বিষয়-বিভবসম্পন্ন হইয়াছিলেন? এ বিষয়ের সন্ধানে আমরা যাহা জানিতে পারিয়াছি তাহা এইখানে বিবৃত হইল। বিদ্যাসাগর মহাশয় বাড়ীতে যাইলে, বীরসিংহ ও নিকটবর্ত্তী গ্রামের দীন-দরিদ্র অবস্থাহীন ব্যক্তিবর্গকে আপনার সাধ্যমত অর্থসাহায্য করিতেন। সন্ধ্যার পর তিনি, চাদরের খুঁটে টাকা বাঁধিয়া,