পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬০
বিদ্যাসাগর।

এ ব্যয় ভার-বহনের একটা সুবিধাও উপস্থিত হইয়াছিল। তিনি সংস্কৃত কলেজে যে শিক্ষা-প্রণালী প্রবর্ত্তিত করেন, তাহা শিক্ষাবিভাগের কর্ত্তৃপক্ষের সম্পূর্ণ অনুমোদিত হইয়াছিল। তাঁহার সংস্কার-ফলে কলেজে পূর্ব্বাপেক্ষা অধিকতর সংখ্যায় ছাত্র হইয়াছিল। ইহাকে শিক্ষা প্রণালীর সুফল ভাবিয়া কর্ত্তৃপক্ষেরা আপন ইচ্ছায় ১৮৫৪ খৃষ্টাব্দের জানুয়ারি বা ১২৬০ সালের পৌষ মাসে তাঁহার ১৫০ দেড় শতটাকা হইতে ৩০০ তিন শত টাকা বেতন করিয়া দেন।

 প্রতি মাসে বীরসিংহের বিদ্যালয়ে শিক্ষকাদির বেতনে ৩০০ তিন শত টাকা ও শ্লেট পুস্তক প্রভৃতিতে ১০০ এক শত টাকা ব্যয় হইত। বালিক-বিদ্যালয় ও নৈশবিদ্যালয়ের ব্যয় মাসে চল্লিশ হইতে পঁয়তাল্লিশ টাকার কমে কইত না। এই সময় গ্রামের দীন-দরিদ্রের চিকিৎসার্থ দাতব্য ঔষধালয় স্থাপিত হয়। সকলে বিনামূল্যে ঔযধ পাইত। বিনা দর্শনীতে ডাক্তার চিকিৎসা করিতেন। একান্ত অবস্থাহীন দীন দরিদ্র লোককে সাগু, বাতাসা প্রভৃতি দিবার জন্য ব্যবস্থা ছিল। তাহাতেও মাসিক এক শত টাকা খরচ পড়িত। বিদ্যাসাগর মহাশয় কলেজে তিনশত টাকা মাত্র বেতন পাইতেন, এবং পুস্তকাদির বিক্রয়ে তাঁহার চারি পাচ শত টাকা আয় হইত। তবে সঞ্চিত কিছুই থাকিত না! এইরূপে দানকার্য্যেই আয়ের পর্য্যবসান হইত। স্বভাবদাতা কি সঞ্চয়ের প্রত্যাশা রাখেন? বৃহত্তর হৃদয়ে সঞ্চয়ের প্রবৃত্তি প্রায়ই স্থান পায় না।

—x—