পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধবা-বিবাহ।
৩২৫

বিধবা-বিবাহের জন্য বিদ্যাসাগরকে অনেক লাঞ্ছনা ও তাড়না সহিতে হইয়াছিল। কেহ কেহ তাঁহার প্রাণনাশেরও সঙ্কল্প করিয়াছিল। বিদ্যাসাগর তাহাতেও বিচলিত হন নাই। তাড়না ও লাঞ্চনা সম্বন্ধে ডাক্তার অমূল্যচরণ বসু ১২৯৮ সালের ২০শে ভাদ্রের হিতবাদীতে এইরূপ লিখিয়াছিলেন,—

 “বিদ্যাসাগর পথে বাহির হইলে চারিদিক হইতে লোক আসিয়া তাঁহাকে ঘিরিয়া ফেলিত; কেহ পরিহাস করিত, কেহ কেহ তাঁহাকে প্রহার করিবার—এমন কি মারিয়া ফেলিবারও ভয় দেখাইত। বিদ্যাসাগর এ সকলে ভ্রূক্ষেপও করিতেন না। একদিন শুনিলেন, মারিবার চেষ্টা হইতেছে। কলিকাতার কোনও বিশিষ্ট ধনাঢ্য ব্যক্তি, বিদ্যাসাগরকে মারিবার জন্য লোক নিযুক্ত করিয়াছেন। দুর্বৃত্তের প্রভুর আজ্ঞাপালনের অবসর প্রতীক্ষা করিতেছে। বিদ্যাসাগর কিছুমাত্র ভীত বা বিচলিত হইলেন না। যেখানে বড় মানুষ মহোদয় মন্ত্রিবর্গ ও পরিষদ্‌গণে পরিবৃত হইয়া প্রহরীরক্ষিত অট্টালিকায় বিদ্যাসাগরের ভবিষ্যৎ প্রহারের উদ্দেশে কাল্পনিক সুখ উপভোগ করিতেছিলেন, বিদ্যাসাগর একবারে সেইখানে গিয়া উপনীত হইলেন। তাঁহাকে দেখিবামাত্র সকলেই অপ্রস্তুত ও নির্ব্বাক হইয়া পড়িলেন। কিয়ৎক্ষণ গত হইলে এক জন পারিষদ্‌ বিদ্যাসাগরের আগমনের কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন। বিদ্যাসাগর উত্তর করিলেন, লোকপরম্পরায় শুনিলাম, আমাকে মারিবার জন্য আপনাদের নিযুক্ত লোকেরা আহার নিদ্রা পরিত্যাগ করিয়া আমার সন্ধানে ফিরিতেছে ও খুঁজিতেছে; তাই আমি ভাবিলাম, তাহাদিগকে কষ্ট দিবার আবশ্যক কি, আমি নিজেই যাই। এখন আপনাদের