পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধবা-বিবাহ।
৩২৭

“যাহা হইবার হইয়াছে, দেখিবেন যেন চাকুরিটী না যায়।” বিদ্যাসাগর মহাশয় হাসিয়া বলেন,—“তাহা হইলে আর চাকুরী হইত না।”

 কেহ কেহ বলেন, বীরসিংহগ্রামে এক বার একটী বালিকার বৈধব্য সংঘটনে বাথিত হইয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জননী, শাস্ত্রীয় মতে বিধবা বিবাহ হইতে পারে কি, পুত্রকে এই প্রশ্ন করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় সেই দিন হইতে শাস্ত্রীয় প্রমাণস’গ্রহ করিতে থাকেন। এ কথা কতদূর সত্য, তা জানি না। তবে নারায়ণ বাবুর মুখে শুনিয়াছি, বিদ্যাসাগর মহাশয়েব জননীর ধারণা ছিল, তাঁহার পুত্র এ বিষয়ে অভ্রান্ত। বিদ্যাসাগর মহাশয় যে সকল বিধবা-বিবাহ দিয়াছিলেন, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জননী তাহাদের কাহারও কাহারও সহিত আহার করিতেন। এক দিন নারায়ণ বাবু বিদ্রূপ করিয়া বলিলেন, “ঠাকুর মা! তুমি যে ইহাদের সহিত বসিয়া আহার করিতেছ? ইহাতে যে জাতি যাইবে।” বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জননী উত্তর কবিলেন— “দোষ কি? ঈশ্বর বহুশাস্ত্রজ্ঞ; ঈশ্বর কি অন্যায় কাজ করিতে পারে?”

 বিধবা-বিবাহ সম্বন্ধে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পিতার কি মত ছিল, তৎসম্বন্ধে মতদ্বৈধ আছে। কেহ বলেন,—“তাহার মত ছিল না; বিধবা-বিবাহের সম্পর্ক হেতু নানা সামাজিক লাঞ্ছনা ও তাড়না সহিতে হইয়াছিল বলিয়া, তিনি কাশীবাসী হন। কেহ বলেন—“তাঁহার মত ছিল। বিধবা-বিবাহ যদি শাস্ত্রসম্মত হয়, পুত্র তাহা প্রমাণ করতে পারে, তাহা হইলে বিধবা-বিবাহে ক্ষতি কি, এইরূপ তাঁহার মত ছিল।” বিধবা বিবাহ সম্বন্ধে