পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৩০
বিদ্যাসাগর।

হইতে এখনই উঠাইয়া দিতে। ঈশ্বর! তুমি এই কার্য্য়ে যেরূপ দৃঢ়সংকল্প এবং একাগ্রচিত্ত হইয়াছ, তাহাতে আমি এইরূপ উত্তর পাইব বলিয়া প্রস্তুত হইয়া আসিয়াছি। ইহাতে অণুমাত্র ক্ষুব্ধ নহি।’ বিদ্যাসাগর কলিলেন, ‘আমি তত সাহসের কথা বলিতেছিলাম না। আপনি বিজ্ঞ ও বৃদ্ধমণ্ডলী বলিয়া যাহা কহিতেছেন, ইহাতে কলিকাতার রধাকান্ত দেব বাহাদুর প্রভৃতি আপনার লক্ষ্য কিনা? আমি উঁহাদের অনেক উপাসনা করিয়াছি। অনেককেই নাড়িয়া চাড়িয়া দেখিয়াছি। সকলেই ক্ষীণবীর্য্য ও ধর্ম্মকঞ্চুকে সংস্কৃত বলিয়া নিশ্চয় করিয়াছি। যাহারা মুক্তকণ্ঠে সহানুভূতি প্রকাশ করিয়াছিলেন, এখন তাঁহাদের আচরণ দেখিয়া নিতান্ত বিস্মিত হইয়াছি। মহাশয়! আমি অনেক দূর অগ্রসর হইয়াছি, এখন আমায় আর যেন প্রতিনিবৃত্ত করিবার কথা বলা না হয়। তর্কবাগীশ বলিলেন,— ‘ঈশ্বর! বাল্যাবধি তোমার প্রকৃতি ও অদম্য মানসিক শক্তির প্রতি আমার লক্ষ্য রহিয়াছে। তোমায় ভগ্নোদ্য়ম ও প্রতিনিবৃত্ত করা আমার সংকল্প নহে।[১]

  1. বিদ্যাসাগর বাল্যাবস্থা হইতেই তর্কবাগীশ মহাশয়ের প্রীতির পাত্র হন। তর্কবাগীশ মহাশয় তাহাকে পু্ত্রবৎ ভালবাসিতেন। ইহার একটা দৃষ্টান্ত দিই:—“তর্কবাগীশ মহাশয় সাহিত্যদর্পণ নামক অলঙ্কার গ্রন্থের টীকা স্বহস্তে লিখিয়াছিলেন। ছাত্রেরা পুঁথির পাতা বাহির করিয়া লইয়া বাসায় যাইত। অধ্যাপনা সময়ে কখন কখন আবশ্যক হলে পাতা মিলিত না। তর্কবাগীশ মহাশয় পুঁথির পাতা বাসায় লইয়াা যাাইতে নিষেধ করিতেন। বিদ্যাসাগর তখন অলঙ্কার শ্রেণীতে পড়িতেন। তিনি একদিন অপরাহ্নে পুঁথির পাতা চুপি চুপি লইয়া বাসায় যাইতেছিলেন। বৃষ্টি হওয়ার দরুণ তিনি পড়িয়া গিয়াছিলেন। পাতা-