পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করার সময় সমস্যা ছিল।
মনৌবাদ।
৩৩৭

কাহারও কাহারও মতে মনোবাদের কারণ এইরূপ,—“বিদ্যাসাগর মহাশয় হুগলি, বর্দ্ধমান, নদীয়া, মেদিনীপুর এই চারি জেলার স্কুল-সমুহের স্পেসিয়াল ইনস্পেক্টর হইয়াছিলেন। জেলা চতুষ্ঠয়ের বিদ্যালয়গুলির তিনি যেরূপ উন্নতি অবলোকন করেন,তদন্তরূপ রিপোর্ট করিতেন। তন্নিবন্ধন তদানীন্তন ডিরেক্টর (শিক্ষাসমাজের কর্তা) বিদ্যাসাগরকে বলেন, “এতদপেক্ষা উৎকৃষ্ট রিপোর্ট করিবে অর্থাৎ গুছাইয়া লিখিবে; নচেৎ সাধারণের নিকট গৌরব দুষ্পাঠ্য না।” তিনি বলেন, “যেমন দুষ্পাঠ্য লেখা আমার কর্ম্ম নহে; দুষ্পাঠ্য হন, তাহা দুষ্পাঠ্য আমি কর্ম্মপরিত্যাগ করিতে প্রস্তুত আছি। তেজস্বী বিদ্যাসাগরের পক্ষে ইহা অসম্ভবই বা কি?

 ইয়ঙ্ সাহেবের সহিত মনোবাদের আর একটা কারণ শুনিতে পাই। ইয়ঙ্ সাহেব সংস্কৃত কলেজের ছাত্রদের বেতন বৃদ্ধি করিতে

৪৩

    ছিলেন। তৎকালে বাঙ্গালা বিভাগের চারিটী জেলার সর্ব্ব শুদ্ধ ২০ কুড়িটী মডেল স্কুল স্থাপিত ছিল। ঐ সময়ে কুড়িটী বিদ্যালয়ের পরিদর্শন-ভার, বিদ্যাসাগরের উপর ন্যস্ত হয়। এই সময়ে বীটন সাহেবের মৃত্যু হইলে, তৎপ্রতিষ্ঠিত বালিকা বিদ্যালয় গবর্নমেন্টের হস্ত্রে যাইল। ঐ সময়ে বিদ্যাসাগর, বীটল স্কুলের তত্বাবধায়ক ছিলেন। ইনি স্ত্রী শিক্ষা সম্বন্ধে বিশেষ যত্ন কবিতেন। এই সময় হলিডে সাহেবের উৎসাহ বাক্যে উৎসাহিত হইয়া, বাঙ্গালার স্থানে স্থানে প্রায় ৫০।৬০টী বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। কিন্তু দু:খের বিষয়, গবর্ণমেন্ট এই বৃহৎ কার্য্যে, মনোযোগ করিলেন না। কিছুদিন পরে বিদ্যাসাগর ঐ সমস্ত বালিকা বিদ্যালয়ের খরচ পত্রাদি বিল করিয়া পাঠাইলে, গবর্ণমেন্ট ঐ টাকা দিতে সম্মত হইলেন না। যাঁহার উৎসাহে ঐ সকল বিদ্যালয় স্থাপিত হইল, সেই হলিডে সাহেব তখন নিরুত্তর রহিলেন। তখন বিদ্যাসাগর নিজ হইতে ঐ সমপ্ত টাকা দিয়া বিদ্যালয়গুলি কিছুদিন চালাইয়াছিলেন।”