পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পদত্যাগ।
৩৩৯

এবং স্কুল-ইনস্পেক্টরের পদ পরিত্যাগ করেন। পাঁচ শত টাকা বেতনের মোহাকর্ষণ কার্য্য-বীরের সে অটুট দৰ্পের সুতীক্ষ কৃপাণাঘাতে মুহূর্তে খণ্ডবিথও হইয়া গেল।

 ইয়ঙ্ সাহেবের ব্যবহারে বিদ্যাসাগর মহাশয় দারুণ মনঃসংক্ষোভে মান্য ছোট লাট বাহাদুর হেলিডে সাহেবকে পদপরিহারকল্পে পত্র লিখেন। পত্র পাইয়া, বঙ্গেশ্বর বিস্ময়ান্বিত হইয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর সে সহসা ৫০০ টাকা বেতনের পদটা অম্লান বদনে পরিত্যাগ করিতে কৃতসংকল্প হইবেন, এটা কখনই তিনি ভাবেন নাই। বিদ্যাসাগর মহাশয়, তাঁহার নিকট ইয়ঙ্ সাহেব-সম্বন্ধে অনেক বারই অভিযোগ করিয়াছিলেন। ১৮৫৫ খৃষ্টাব্দে প্রেরিত শিক্ষাসম্বন্ধে “ডেসপ্যাচের” মর্ম্মার্থ লইয়া, ইয়ঙ্ সাহেবের সহিত বিদ্যাসাগরের কতকটা মনোবাদ চলিতেছিল, তাছাও তিনি জানিতে পারিয়াছিলেন। তবে সে মনোবাদ, পরিণামে যে এত ভয়ঙ্কর হইয়া উঠিবে এবং তাহারই ফলে অবশেষে বিদ্যাসাগর যে পদপরিত্যাগে সংকল্প করিবেন, তাহা তিনি মনে করেন নাই।

 বিদ্যাসাগর, মহাশয়, ছোট লাটের নিকট অভিযোগ করিতেন;—“শিক্ষা-সংপ্রসারণ-সম্বন্ধে, বিলাত-প্রেরিত ডেসপ্যাচের যে মর্ম্ম, আমি সেই মর্ম্মানুসারে কার্য্য করি; কিন্তু ইয়ঙ্ সাহেব, তাহার বিপরীত মর্ম্মগ্রহণ করিয়া, পদে পদে আমার কার্য্যের প্রতিবাদ ও প্রতিবন্ধকতা করিয়া থাকেন। এরূপ অবস্থায় আমার চাকুরী করা দায়।” বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অভিযোগ শুনিয়া, বঙ্গেশ্বর তাঁহাকে ইয়ঙ্ সাহেবের সহিত মিলিয়া মিশিয়া কাজ করিতে পরামর্শ দিবেন বলিয়া, আশ্বাস প্রদান করিতেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ও,ছোট লাট বাহাদুরের আশ্বাসবাক্যানুসারে মিলিয়া