পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪০
বিদ্যাসাগর।

মিশিয়া সদ্ভাবে সপ্রণয়ে কার্য্যনির্ব্বাহের চেষ্টা করিতেন। কিন্তু তিনি বুঝলেন যে, ছোট লাট বাহাদুরের নিকট পুনঃ পুনঃ অনুযোগেরই প্রয়োজন হয়, অথচ অনুযোগ করা বৃথা। ছোট লাট বাহাদুরের আশ্বাসনুসারে কার্য্যে প্রবৃত্ত হইয়াও, ইয়ঙ্ সাহেবের মতি-গতি-সম্বন্ধে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ধারণা অন্যরূপ হইল না। যে ইয়ঙ্ সাহেবকে তিনি হাতে করিয়া শিক্ষাবিভাগের সকল কাজ শিখাইয়াছেন, সেই ইয়ঙ সাহেবই তাঁহার সকল কার্যের বিরোধী এবং প্রতিবাদী, অথচ তৎ প্রতীকারেরও আর পথ নাই; এইরূপ ভাবিয়াই, তিনি ছোট লাট বাহাদুরকে পদ পরিত্যাগের পত্র লিখিয়াছেন।

 ছোট লাট বাহাদুর, বিদ্যাসাগর মহাশয়কে যথেষ্ট ভালবাসিতেন নিশ্চিতই। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়কে মিষ্ট বাক্যে সাস্তুনা করিবার জন্য চেষ্টিত হইয়াছিলেন; এৰং পত্র-প্রত্যাখান করিয়া লইবার জন্য ও সনির্ব্বন্ধ অনুরোধ করিয়াছিলেন। পত্র প্রত্যাখ্যান করিয়া লইলে, বিদ্যাসাগর মহাশয় যে যথেষ্ট প্রতিষ্ঠাভাজন হইবেন, বিদ্যাসাগর মহাশয় ছোট লাট বাহাদুরের নিকট এ আশ্বাসও পাইয়াছিলেন।

 সে আশ্বাস-বাণীতে কিন্তু বিদ্যাসাগর বিচলিত হইলেন না। তথন ও তাহার হৃদয়, মর্ম্ম বেদনার প্রচণ্ড উগ্র তাপে জর্জরিত। তিনি পত্র-প্রত্যাখ্যানে বা পুনরায় পদগ্রহণে কিছুতেই সম্মত হইলেন না। তিনি হোলডে সাহেবকে স্পষ্টই বলেন—”সহিষ্ণুতার সীমা অতিক্রম করিয়াছি; আর ফিরিবার পথ দেখি না; ক্ষমা করুন। আমি আর চাকুরী করিব না; আমার আর তাহাতে প্রবৃত্তি নাই।” ছোট লাট বাহাদুর, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের এইরূপ তেজ-