পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪২
বিদ্যাসাগর।

 বিদ্যাসাগর মহাশয়ের এই পদ-পরিত্যাগে, তাঁহার পরিচিত সরকারী কর্মচারিবর্গ বড় ব্যথিত হইয়াছিলেন। সর্ব্বাপেক্ষা দুঃখিত হইয়াছিলেন, তৎকালিক সেক্রেটরী স্যার সিসিল বীডন্ সাহেব। বীডন্ সাহেব, বিপ্পাসাগর মহাশয়কে প্রগাঢ় শ্রদ্ধা, ভক্তি ও বিশ্বাস করিতেন। বাঙ্গালীর মধ্যে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ন্যায়, আর কেহই বীভন সাহেবের বিশ্বাস-ভাজন ছিলেন না। তাহার একটী প্রকৃষ্ট প্রমাণ এই,—বিধবা-বিবাহের আইন পাশ হইবার পর ১৮৫৭ খৃষ্টাব্দে লোমহর্ষণ সিপাহী-বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। কোন কোন অঞ্চলে বিধবাবিবাহের আইনটী এই সিপাহী-বিদ্রোহের কারণ বলিয়া নির্দ্দেশিত হইয়া থাকে। সে কথা লইয়া এখানে তর্ক-বিতর্কের প্রয়োজন নাই। ভগবৎ-কৃপায় সে বিদ্রোহ প্রশমিত হইলে পর, মহারাণীর অভয়বাণীর ঘোষণাপত্র প্রকাশিত হয়। সেই ঘোষণাপত্র নানা ভাষায় অনুবাদিত হইয়াছিল। বীডন সাহেব, সেই ঘোষণা পত্র বাঙ্গালায় অনুবাদ করাইবার জন্য বিদ্যাসাগর মহাশয়কে পত্র লিখিছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পদত্যাগ করিবার একমাস পূর্ব্বে বীডন সাহেব নিম্নলিখিত মর্ম্মে পত্র লেখেন,—“আমার ইচ্ছা, আপনি ঘোষণাপত্রটি, বাঙ্গালায় অনুবাদ করেন। আগামী কলা ১১টার সময় আফিসে আসিলে ভাল হয়। কাগজ-পত্র পাঠাইবার নিয়ম নাই; নতুবা পাঠাইতাম। এই চিঠির মর্ম্ম কাহাকেও বলবেন না। আপনি যে ইহার তর্জ্জমা

    সাগর মহাশয় এ কথা জানিতে পারি। আপনি পদত্যাগ করেন।” আমি বহু চেষ্টা করিয়াও এ কথার প্রমাণ সংগ্রহ করিতে পারি নাই, এই জঙ্ক এ কথায় আদৌ বিশ্বাস হয় না। বিশেষতঃ, বিদ্যাসাগর মহাশয় সম্বন্ধে ইহা একেবারই অবিশ্বাস্য। কি করিয়া এমন কথা উঠিল, ভগগানই জানেন।