পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬০
বিদ্যাসাগর।

আত্মোৎসর্গ করিয়াছিলেন। ইংরেজী শিক্ষার সুবিস্তর সংপ্রসারণে এ দেশের প্রকৃত মঙ্গল সাধন হয়, এটা অবশ্য বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সুদৃঢ় ধারণা ছিল। সেই জন্য কি পরাধীন অবস্থা, কি স্বাধীন অবস্থা, সর্ব্বাবস্থাতেই তিনি ইংরেজী শিক্ষার সংপ্রসারণ-সংকল্পে আত্ম-প্রাণ নিয়োজিত করিতেন। ইংরেজী আদর্শে গঠিত চরিত্রবান অনেকেই ইংরেজী শিক্ষা বিস্তারের চেষ্টা করিয়াছেন; কিন্তু বিদ্যাসাগরের মত কৃতকর্ম্মা কয় জন? চাকুরির সময়ে তিনি যেমন নানা স্থানে নানা স্কুলের প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন, চাকুরী যাইবার পরেও তাঁহার যত্নে এবং অর্থব্যয়ে নানা স্থানে স্কুল প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। আপন আর্থিক উন্নতিসাধন অপেক্ষা ঐ কার্য্যকে তিনি জীবনের অধিকতর কর্তব্য কর্ম্ম বলিয়া বিবেচনা করিতেন। তাহারও পরিচয় পদে পদে পাওয়া যায়। চাকুরী পরিত্যাগ করিবার পর প্রথমতঃ ১২৬৫ সালে ২১ শে চৈত্র শুক্রবার (১৮৫৯ খৃষ্টাব্দের ১লা এপ্রিল) বিদ্যাসাগর মহাশয়ের যত্নে ও উদ্যোগে মুর্শিদাবাদের অন্তর্গত কান্দী গ্রামে একটা ইংরেজী ও সংস্কৃত স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। কান্দী গ্রাম পাইকপাড়া রাজবংশীয় রাজা প্রতাপচন্দ্র সিংহের জন্মস্থান। রাজা বাহাদুরেরা আপন ব্যয়ে স্কুলের প্রতিষ্ঠা করেন; কিন্তু উহাতে বিদ্যাসাগরের সম্পূর্ণ উত্তেজনা। স্বয়ং বিদ্যাসাগর মহাশয় ঐ স্কুলের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। সেই সময়ে রাজা প্রতাপনারায়ণের সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সবিশেষ সদ্ভাব সংস্থাপিত হয়। সিংহরাজপরিবারও এক সময়ে বিদ্যাসাগরের নিকট যথেষ্ট উপকার ও সাহায্য পাইয়াছিলেন। বিদ্যাসাগরের স্বভাবসিদ্ধ সরলতার এমনই মোহকরী আকর্ষণী শক্তি যে, একবার তাঁহার সহিত যাঁহার