পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অধমর্ণের উদ্ধার।
৩৮৫

নিকট খৎ লেখাইয়া এবং স্বয়ং সাক্ষী হইয়া ৫০০৲ টাকা তাঁহাদিগকে দিয়াছিলেন। তাঁহারা কিন্তু ইহার পর আর বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সহিত সাক্ষাৎ করেন নাই। রাখাল বাবুর মৃত্যুর পর বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহার স্ত্রীকে সুদসহ টাকা দিয়া খৎ খালাস করেন।

 (২) এক বার পণ্ডিত জগন্মোহন তর্কালঙ্কার ৫০০৲ টাকার জন্য বিপদ্‌গ্রস্ত হইয়াছিলেন। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট কাঁদিয় কাটিয়া পড়েন। বিদ্যাসাগর মহাশয় ৫০০৲ টাকা ধার করিয়া তাঁহাকে দিয়াছিলেন। ইহার পরে তর্কালঙ্কারের সহিত আর তাঁহার সাক্ষাৎ হয় নাই।

 (৩) এক সময় জাহানাবাদের নিকট কোন গ্রামনিবাসী ভট্টাচার্য্য দুই শত টাকা ঋণ করিয়া পুত্র-পরিজন প্রতিপালন করিয়াছিলেন। তিনি এ ঋণ পরিশোধ করিতে পারেন নাই। পাওনাদার মহাজন তাঁহাকে ব্যতিব্যস্ত করিয়া তুলিয়াছিলেন। ভট্টাচার্য্য মহাশর বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট আসিয়া গলদশ্রুলোচনে কাতর-কণ্ঠে আপনার দুঃখের কথা জানাইয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহাকে দুই শত টাকা দান করিয়াছিলেন।

 পাঠক! ভাবুন-গৃহস্থ বিদ্যাসাগরের এ কি অপার করুণা এবং অশ্রুতপূর্ব অসমসাহস! বিদ্যাসাগরের এ বিপন্নোদ্ধারে কোটিপতি ধনকুবেরকে সবিস্ময়ে সহস্র বার মস্তক অবনত করিতে হয়। হিন্দু, মুসলমান, খৃষ্টান, শিখ, পারসীক,—যে কেহ হউন না, বিদ্যাসাগরের নিকট হাত পাতিয়া কখন কেহ বঞ্চিত হন নাই।

 ভাটপাড়ানিবাসী মহামহোপাধ্যায় শ্রীযুক্ত রাখালদাস ন্যায়-