পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধবা বিবাহে ঋণ।
৪৫৭

ব্যস্ত হইতে হইত। মফস্বলে বিধবা বিবাহের পক্ষপাতীদিগের তাড়না ও লাঞ্ছনার সীমা ছিল না। জাহানাবাদ মহকুমার চন্দ্রকোণা থানার অন্তবর্ত্তী কুমারগঞ্জে বিধবা-বিবাহের পক্ষ ও বিপক্ষদের এক সময় খুব সংঘর্ষণ চলিয়াছিল। এতৎসম্বন্ধে বিদ্যাসাগর মহাশয় স্বহস্তে ইংরেজীতে এক বিস্তৃত বিবরণ লিখিয়াছিলেন। তাহার মর্ম্ম এই,—

 “কুমারগঞ্জে বিধবা-বিবাহের, পক্ষপাতী দলকে চড়ক পূজায় শিবের মন্দিরে প্রবেশ করিতে দেওয়া হয় নাই। এতৎসম্বন্ধে পক্ষপাতীদের পক্ষ হইতে জাহানাবাদের ডিপুটী মাজিষ্টরকে আবেদন করা হইয়াছিল। তিনি তদন্তের হুকুম দেন। তদন্ত হইয়াছিল, উৎসব সাঙ্গ হইবার পর। জমীদার বিধবাবিবাহে পক্ষপাতীদিগকে প্রহার করিয়া জরিমানা আদায় করিয়াছিলেন। অনেকেই সপরিবারে গ্রাম ত্যাগ করে। পুলিসে সংবাদ দিলেও, পুলিশ তদন্তে ঔদাসীন্য প্রকাশ করিতেন।

 এই ঘটনায় বিদ্যাসাগর মহাশয় স্পষ্টতঃই লিখিয়াছিলেন,—

 “যদি উৎপীড়ন নিবারণ না হয়, যদি অত্যাচারী দণ্ডিত না হয়, তাহা হইলে আমার এ পৃথিবীতে থাকিবার প্রয়োজন নাই। তাহা হইলে আমার জীবন-ব্রতের উদ্যাপন হিবে কিসে? এ ব্রতসাধনেই তো আমি আত্মসমর্পণ করিয়াছি। যদি ব্রত সিদ্ধ না হইল, তাহা হইলে জীবন বৃথা।”