পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেশত্যাগ।
৪৭৩

হালদার বাবুরা আসিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়কে বলিলেন,—“মহাশয়। যাহাতে এ বিবাহ না হয়, আপনাকে তাহাই করিতে হইবে।” বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহাদের কাতরতা দেখিয়া তাঁহাদিগকে অভয় দিলেন এবং বলিলেন,—“বিবাহ হইবে না, আপনারা উহাদিগকে লইয়া যাউন।” তাঁহারা নিশ্চিন্ত হইলেন, কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মধ্যম ভ্রাতা দীনবন্ধু ন্যায়রত্ন ও গ্রামের অন্যান্য কয়েক জন রজনীযোগে তাঁহাদের বিবাহ কার্য্য সম্পাদন করিয়া দেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় ইহার বিন্দুবিসর্গও জানিতেন না। তিনি প্রাতঃকালে উঠিয়া বাড়ীর বারান্দায় বসিয়া তামাক খাইতে খাইতে অকস্মাৎ শঙ্খধ্বনি শুনিতে পাইলেন; কিন্তু ইহার কিছু ভাব গ্রহণ করিতে পারিলেন না। সেই সময় প্রতিবেশী গোপীনাথ সিংহ তথায় আসিয়া উপস্থিত হন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিল,”শাঁক বাজিতেছে কেন?” সিংহ মহাশয় বলিলেন,—“আপনি জানেন না? মুচিরাম বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবাহ হইয়া গেল।” শুনিয়া ক্রোধে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বদনমণ্ডল রক্তিমা বর্ণ ধারণ করিল। তিনি আর কোন কথা না কহিয়া, কেবল তামাক টানিতে টানিতে ধুমত্যাগ করিতে লাগিলেন। রাগ হইলে তিনি প্রায়ই এইরূপ করিতেন। রাগ হইলে তিনি অনেক সময় চুপ করিয়া থাকিতেন; বড় একটা কথা কহিতেন না। যদি কোন স্নেহাস্পদ বয়ঃকনিষ্ঠকে “ইনি” “উনি “বাবু” প্রভৃতি বাক্য প্রয়োগ করিতেন, তাহা হইলে বুঝিতে হইত, তাঁহার অন্তরে দাবানল প্রধূমিত। যাহাই হউক, বিদ্যাসাগর মহাশয় সিংহ মহাশয়কে জিজ্ঞাসা করিলেন,—“তুই ইহার কিছুই জানিস না?” সিংহ মহাশয় উত্তর দিলেন,—