পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
left
রাজা সতীশচন্দ্র।
৪৮৯

লোকান্তর হইয়াছিল। যে হিন্দুকূলচূড়ামণি মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র বিধবা-বিবাহের প্রতীদ্বন্দ্বী ও প্রতিবাদী ছিলেন, তাঁহারই বংশীয় মহারাজ শ্রীশচন্দ্র বিধবা-বিবাহের পৃষ্ঠপোষক হইলেন। ইহা শিক্ষাসংস্রব ও যুগ-ধর্ম্মের পরিচয়।

 শ্রীশচন্দ্রের পুত্র সতীশচন্দ্রও পিতার মত বিদ্যাসাগর মহাশয়কে শ্রদ্ধা-ভক্তি করিতেন। পিতার মৃত্যুর পরও মহারাজ সতীশচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সহিত পূর্ব্ববৎ ঘনিষ্ঠ সংস্রব সংরক্ষণ করিয়াছিলেন। সতীশচন্দ্রের মৃত্যুতে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের হৃদয়ে দারুণ শোক-শেল বিব্ধ হইয়াছিল।

 সতীশচন্দ্রের মৃত্যুর পরও, বিদ্যাসাগর মহাশয়কে কৃষ্ণনগর রাজ্যের সুশৃঙ্খলা স্থাপন ও শ্রীবৃদ্ধি-সাধন জন্য অনুরুদ্ধ হইয়া, অনেক সময় ক্ষতি ও অর্থহানি স্বীকার করিতে হইয়াছিল। উপকারী বন্ধুর উপকার-সাধনার্থ এরূপ ক্ষতি-স্বীকার কৃতজ্ঞ বিদ্যাসাগরের স্বভাবসিদ্ধ।


    রাজা (শ্রীশচন্দ্র) অনেক দিন পূর্ব্বে সেই বচনসহায়ে বহু ব্রাহ্মণপণ্ডিতের সহিত বিচারে প্রবৃত্ত হন এবং যখন বিদ্যাসাগরের সহিত প্রথম সাক্ষাৎ হয়, তখন তিনি বিধবা-বিবাহের প্রসঙ্গে ঐ বচনের উল্লেখ করেন।”
     এই ক্ষিতীশ-বংশাবলী-চরিতে বিধবা বিবাহ সম্বন্ধে সে একটী কৌতুকাবহ ঘটনার উল্লেখ আছে, তাহাই বুঝিতে হয়, মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের সময়, বিধবা-বিবাহ শাস্ত্রসঙ্গত কি না, তদ্বিষয়ে আলোচনা হইয়াছিল। তৎকালে বিক্রমপুরবাসী প্রসিদ্ধ রাজা রাজবল্লভ স্বীয় তরুণ বয়স্কা কস্থায় বৈধব্যব্যাকুলতায় কাতর হইয়া বিধবা বিবাহ চালাইবার উদ্যোগ করেন। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের কৌশলে সে চেষ্টা বিফলীকৃত হয়। সে বৃত্তান্তবর্ণনের স্থান হইবে না। পাঠকবর্গ ইচ্ছা করিলে, ক্ষিতীশ-বংশাবলী-চরিত্রের ১৫৪-১৫৬ পৃষ্ঠা পাঠ করিতে পারেন।