পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাণী ভুবনেশ্বরী।
৪৯১

রাজ্ঞীর মৃত্যু হয়। মহারাজ সতীশচন্দ্র লোকান্তরিত হইলে পর, কনিষ্ঠা রাজ্ঞী ভুবনেশ্বরী, স্বয়ং বিষয়কার্য্য চালাইতে ইচ্ছা করেন। কিন্তু তাৎকালিক দেওয়ান কার্তিকচন্দ্র রায় দেখিলেন, বিষয়ের যেরূপ শোচনীয় অবস্থা, তাহাতে স্বয়ং রাণী বিষয়ভার গ্রহণ করিলে নানা কারণে বিষয়ের আরও শোচনীয় অবস্থা সংঘটিত হইবে। এতৎসম্বন্ধে কর্তব্য-নির্দ্ধারণার্থ তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সহিত পরামর্শ করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় সকল অবস্থা পর্য্যালোচন করিয়া, কোর্ট অব ওয়ার্ডের হস্তে বিষয় থাকা ভাল বলিয়া, অভিপ্রায় প্রকাশ করেন।[১] তখন রায় মহাশয়, বিদ্যাসাগর মহাশয়কে অনুরোধ করেন যে, তিনি যেন রাজ্ঞী ভুবনেশ্বরীকে বুঝাইয়া, বিষয় কোর্ট অব ওয়ার্ডের হস্তে অৰ্পণ করিতে পরামর্শ দেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহাতেই সম্মত হন। তিনি সর্ব্ব কর্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া, কৃষ্ণনগরে যাইয়া, রাণীকে বিধিমতে পরামর্শ দেন। রাণী তাঁহার পরামর্শ যুক্তিসঙ্গত ভাবিয়া কোর্ট অব্ ওয়ার্ডের হস্তে বিষয় অর্পণ করেন। ১২৮৫ সালের ২৩শে পৌষ বা ১৮৭৯ খৃষ্টাব্দেব ৬ই জানুয়ারী, বিষয়সম্পত্তি কোর্ট অব্ ওয়ার্ডে অর্পিত হয়।


  1. না-বালকী জমিদার রক্ষা করণোদ্দেশে কোর্ট অব্ ওয়ার্ডের সৃষ্টি। মাল গুজরিতে ব্যাঘাত ভাবিয়াই যে গবর্ণমেণ্ট এ কার্য্যে হস্তক্ষেপ করেন না, আইনকারেরা তাহা স্পষ্টাক্ষরে স্বীকার করিয়াছেন। কোর্ট অব্ ওয়ার্ডে বিষয় না দিলে যে রক্ষা হয় না এমন নহে, পুটিয়ার বাণী শরৎসুন্দরী ও বহরমপুরের মহারাণী স্বর্ণময়ী, ইতর জাজ্বল্যমান প্রমাণ। তবে বিদ্যাসাগর মহাশয় বুঝিয়াছিলেন যে, নবদ্বীপ রাজ্যের বিষয় কোর্ট অব ওয়ার্ডে না দিলে বিষয় রক্ষা করা দুষ্কর। বাস্তবিকই ওয়ার্ডে গিয়া, বিষয় শ্রীবৃদ্ধিসম্পন্ন হইয়াছিল। পূর্ব্বেকার সব ঋণ পরিশোধিত হয়।